আঠারো বছরে দৈনিক সিনসা : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

শেয়ার করুন

॥ ড. মো. মনছুর আলম ॥
‘বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি!/রয়ে গেল অগোচরে। বিশাল বিশ্বের আয়োজন;/মন মোর জুড়ে থাকে অতিক্ষুদ্র তারি এক কোন।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর আক্ষেপোক্তি বলে দেয় এই বিশাল বিশ্ব ব্রহ্মা- সমন্ধে জানার শেষ নেই। বাস্তবিক পক্ষে আমরা কতটুকুই বা জানি! তবে এ কথা ঠিক যে জানার অন্যতম প্রধান এবং সহজতম মাধ্যম হল সংবাদ-সাময়িকপত্র। ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ‘Newspaper is a storehouse of knowledge.‘ অর্থাৎ সংবাদপত্র হল মানুষের জ্ঞান ভা-ার। মানুষের আত্মচেতনা, আত্মপ্রকাশ ও আত্মপ্রচারের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সংবাদ-সাময়িকপত্র। জাতীয় জাগরণ ও জনমত সৃষ্টিতে সংবাদ-সাময়িক পত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদপত্র জাতি-গোষ্ঠী-সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রের শুধু মুখপত্র হিসেবেই কাজ করে না, অনেক সময় মেরুদ-ের ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি জ্ঞানের বিচিত্র বিষয় সংবাদপত্রে স্থান পায়। ফলে মানুষ অতি সহজে ও সূলভে এই নিত্য নিয়মিত বিদ্যার সাথে পরিচিত হবার সুযোগ লাভ করে। মানুষের বাক স্বাধীনতার অধিকার, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ, দাবি-দাওয়া আদায়, ন্যায়-নীতির প্রচার সংবাদ-সাময়িকীর দ্বারাই হয়ে থাকে। এছাড়া সংবাদপত্র বর্তমান ও অতীতের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের হালচাল, পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিশ্লে¬ষণ ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের খোরাক জোগায় এবং মানুষের রাজনৈতিক চেতনা, হিতাহিত জ্ঞান ও চিত্তবৃত্তির বিকাশ সাধন করে থাকে।
বাংলার নবজাগরণের একটি শক্তিশালী মাধ্যম ছিল সংবাদ-সাময়িকপত্র। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলা তথা উপমহাদেশে সর্বপ্রথম মুদ্রণযন্ত্র স্থাপিত হবার ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নবজাগরণের সূচনা হয়। আর নবজাগরণের ক্ষেত্রে সংবাদ-সাময়িকপত্র মুখ্য ভূমিকা পালন করে। উপমহাদেশে সর্বপ্রথম ১৭৮০ খ্রিস্টব্দের ২৯ জানুয়ারি কলকাতা থেকে ইংরেজি ভাষায় সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ছিলেন জেস্ম আগাস্টাস হিকি। তিনি ‘বেঙ্গল গেজেট’ বা ‘Hicky’s Bengal Gazette or the Original Calcutta General Advertiser’ নামে একটি ইংরেজি সাপ্তাহিক সাময়িকপত্র প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে কলকাতা থেকে Bengal Journal(1785)’, ‘Bengal Hurkaru (1795)’ প্রভৃতি ইংরেজি সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকাগুলো ছিল বেসরকারি ইউরোপীয়দের মুখপত্র। এদের সাথে ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষের ব্যবসায়িক স্বার্থ ও ব্যক্তিগত বিদ্বেষ প্রভৃতি কারণে বিরোধ ঘটে। ফলে ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকরা এদেশ থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য হয় এবং লর্ড ওয়েলেসলি ‘গোটা সম্পাদক জাত’কে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে কঠোর সেন্সর ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। পরবর্তীতে লর্ড হেস্টিংস-এর আমলে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে এই ব্যবস্থা বাতিল হয়। তবে শর্ত থাকে যে, সাময়িকপত্রে কর্তৃপক্ষ বিরোধী কোন সংবাদ ও মন্তব্য করা যাবে না। ঠিক এই সময় বাংলা সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু হয়। জাতিকে জাগাতে, উন্নতির পথে পরিচালিত করতে হলে সংবাদপত্র প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে; আর এ চিন্তা-চেতনায় সমাজের জন্য হাল ধরেন বাংলার তৎকালীন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও উচ্চ শ্রেণির ব্যক্তিরা। তাঁদেরই উদ্যোগে বাংলা ভাষাকে বাহন করে সংবাদ সাময়িকপত্রের যাত্রা শুরু হয়।
তবে তার আগে জন ক্লার্ক মার্সম্যান (১৭৯৪-১৮৭৭)-এর সম্পাদনায় শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের উদ্যোগে সর্বপ্রথম বাংলা সংবাদপত্র আলোর মুখ দেখে। তারা ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে কলকাতা হতে বাংলা মাসিকপত্র ‘দিগদর্শন’ প্রকাশ করেন। পরের মাসে তাঁরই সম্পাদনায় ২৩ মে কলকাতা হতে প্রকাশ পায় প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক ‘সমাচার দর্পন’। ঠিক একই বছর জুন মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় বাঙালি সম্পাদিত ও পরিচালিত বাংলা ভাষায় মুদ্রিত প্রথম সাময়িকপত্র সাপ্তাহিক ‘বাঙ্গালা গেজেট’। পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন গঙ্গা কিশোর ভট্টাচার্য (মৃ. ১৮৩১)। এভাবে ৫০ বছরের ব্যবধানে মাসিক, পাক্ষিক, সাপ্তাহিক, অর্ধসাপ্তাহিক, দৈনিকসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে। ব্রিটিশযুগে দীর্ঘ প্রায় ১৩০ বছর চলার পর বাংলা তথা উপমহাদেশে সংবাদ-সাময়িকপত্র প্রকাশে এক বিপ্ল¬ব সাধিত হয়। এ ধারায় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশ বিভাগের পর শুধুমাত্র পূর্ববাংলা থেকে ২৭টি দৈনিক, ২০১টি মাসিক, ৫৭টি পাক্ষিক, ২৭টি ত্রৈমাসিক, ১৪টি দ্বিমাসিক, ১০টি ষান্মাসিক, ০৭ অর্ধ-সাপ্তাহিক, ০৭টি সংকলন, ০৬ টি বার্ষিকী, ০২টি চতুর্মাসিক, মহিলা পত্রিকা ১৭ টি, কিশোর পত্রিকা ৩৩টি, বিজ্ঞান ১৮টি ও ১১টি ধর্মবিষয়ক পত্রিকাসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দফতরের মুখপত্র এবং প্রতিটি প্রশাসনিক ইউনিটের মুখপত্রসহ সর্বমোট ৪৬৭টি প্রত্রিকা প্রকাশের সন্ধান পাওয়া যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর বাংলা পত্রিকার গণজোয়ার লক্ষ্য করা যায়, বিশেষকরে দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে। বিশ্বায়ন, একবিংশ শতাব্দীর চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, স্মার্ট বাংলাদেশর স্বপ্ন পূরণ প্রভৃতিকে মাথায় রেখে দৈনিক পত্রিকাগুলো নব নব চিন্তা-চেতনা ও কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে পাবনা জেলা।
পাবনা থেকে বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় ৮ পৃষ্ঠার একমাত্র রঙিন পত্রিকা ‘দৈনিক সিনসা’। ‘সিনসা’ একটি ফারসি শব্দ; যার আভিধানিক অর্থ শান্তি। আর শান্তি সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে ‘সত্য খবর সবার জন্য’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় পত্রিকাটি। বর্তমানে ‘দৈনিক সিনসা’ সগৌররে, স্বমহিমায় উদ্ভাসিত একটি আদর্শ দৈনিক পত্রিকার নাম। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে যে দৃঢ়-নির্ভিক; এবং শিক্ষা, রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশে যে অগ্রণী- তার নাম ‘দৈনিক সিনসা’। নতুন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আধুনিক পাঠকের চাহিদা পূরণে নতুন নতুন চিন্তাধারা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ‘দৈনিক সিনসা’। তাইতো আজ পাঠকদের মুখে মুখে হতে হাতে শোভা পাচ্ছে এই পত্রিকাটি। বলা হচ্ছে, পাবনা থেকে প্রকাশিত ১৪টি পত্রিকার মধ্যে পাবনার একমাত্র রঙিন এবং নিয়মিত পত্রিকা ‘দৈনিক সিনসা’; আমারও তাই মনে হয়েছে। এদিকে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রকাশক ও সম্পাদক এস এম মাহাবুব আলম; যার প্রমাণ আমরা পত্রিকার ছত্রে ছত্রে লক্ষ্য করছি। আমরা যদি পত্রিকাটির এক সাপ্তোহের সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ কার্যক্রম পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো- পত্রিকাটির ১ম পৃষ্ঠা একটি আধুনিক মানের জাতীয় পত্রিকার মতই প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। প্রতিদিনের নিত্য নতুন অতি গুরুত্ববহ ছবিসহ আঞ্চলিক বা স্থানীয় সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ শিরনাম, আকর্ষণীয় ক্যাপশনে ১ম পৃষ্ঠা সাজানো হয়। ২য় পৃষ্ঠায় সম্পাদকীয়তে সম্পাদক মহোদয় অতি যতেœ আধুনিক যুগ-জিজ্ঞাসার প্রতি নজর রেখে সম্পাদকীয় লেখেন। এছাড়া উপসম্পাদকীয়তে দেশের প্রথিতযশা বিশেষকরে পাবনার লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্টদের লেখা প্রচারিত হয়। ৩য় পৃষ্ঠায় আঞ্চলিক সংবাদ বিশেষ করে পাবনা, নাটোর, রাজাশহী, নওগা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, কুষ্টিয়ার সংবাদ বেশি স্থান পায়। পত্রিকাটির ৪র্থ পৃষ্ঠা শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক পাতা হিসেবে জনপ্রিয়। শিক্ষা অংশে- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মধ্যমিক শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর ছাপা হয়; দেশের সুনামধন্য শিক্ষকদের দ্বারা প্রশ্নপত্র প্রনয়ণ, উত্তর তৈরী এমন কি উদ্দীপক তৈরীর কলা-কৌশল তুলে ধরা হয়। এই উদ্দীপকগুলো দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকগণের নিকট হতে সংগৃহীত। এর পাশে অত্যধিক জনপ্রিয় একটি বিষয় ‘সিনসা শিশু কিশোর মেলা’ এবং মাঝে মধ্যে ‘ সিনসা শিশু কিশোর কুইজ প্রতিযোগিতা’ স্থান দেওয়া হয়। সিনসা কুইজে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষায়াবলী, ভাষা-সাহিত্য, বিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি, প্রাণিজগৎ, খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে বিধায় এই পাতা পাবনার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে হয়। ৪র্থ পৃষ্ঠার নিচের অর্ধাংশ জুড়ে ছাপা হয় আন্তর্জাতিক সংবাদ। আন্তর্জাতিক অংশে- দেশের বড় বড় জাতীয় দৈনিকের মত আন্তর্জাতিক খবর স্থান পাওয়ায় পাবনার পাঠকের চাহিদা পূরণ হয়। সম্পাদক সাহেব বিশ্বের অত্যাধিক গুরুত্ববহ সংবাদ ছাপলেও আমার মনে হয় আন্তর্জাতিক সংবাদের জন্য একটি ফুল পেজ রাখা যেতে পারে। পত্রিকাটির ৫ম পৃষ্ঠা আরো বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে হয়। কারণ এ পৃষ্ঠায় শনিবারে ‘লাইফ স্টাইল’, রবিবারে ‘স্বাস্থ্য পাতা’, সোমবারে ‘মিডিয়া ওয়াচ’, মঙ্গলবারে ‘পুষ্টি গুণ’, বুধবারে ‘সাহিত্য পাতা’, বৃহস্পতিবারে ‘প্রবাস কথা’ ও ‘আহারে বাহারে’, শুক্রবারে ‘ধর্ম চিন্তা’ বিষয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ খবর ছাপা হয়। তাই ৫ম পাতা সর্ব শ্রেণি সর্ব পেশার মানুষের কাছে সমধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে হয়। বুধবারের সাহিত্য পাতার জন্য পাবনার কবি-সাহিত্যিকগণ মুখিয়ে থাকেন। মঙ্গলবারের মধ্যে কবিতা চাওয়া হয়। অতঃপর অগে আসলে আগের ভিত্তিতে কবিতা ছাপানো হয়। এ পাতায় নবীন কবিদের কবিতা গুরুত্ব সহকারে ছাপানো হয়। ভবিষ্যত কবি তৈরীতে সিনসা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে এ কথা নির্দিধায় বলা যায়। ৬ষ্ঠ পৃষ্ঠায় দেশ ও জনপদের খবর। ৭ম পৃষ্ঠার অর্ধাংশে খেলাধুলা ও অপর অর্ধাংশে বিনোদন দিয়ে সাজানো থাকে। ৮ম পৃষ্ঠা অর্থাৎ শেষ পৃষ্ঠা একটি আধুনিক মানের জাতীয় পত্রিকার মতই সাজানো। অর্থৎ প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির সমন্বয় সাধন করে ‘দৈনিক সিনসা’-কে এগিয়ে নেয়ার প্রাণন্তকর প্রচেষ্টা। সব মিলিয়ে একথা নিদির্ধায় বলা যায় ‘দৈনিক সিনসা’ একটি আধুনিক মানের ও গুণের পত্রিকা; যা জাতীয় পত্রিাকায় পরিণত হওয়া এখন সময়ের দাবি।
‘দৈনিক সিনসা’ পত্রিকা একটি সরকারি বিজ্ঞাপন তালিকাভুক্ত পত্রিকা। পত্রিকাটি ইতোমধ্যে ৮ম ওয়েজ বোর্ড তালিকাভুক্ত হয়েছে। পত্রিকাটি শিক্ষা, সামাজ চিন্তন, শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক জাগরণ, পরিবেশ ও নদী আন্দোলন এমনকি মানবিক, সমাজকল্যাণ ও আর্ত্মসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে; যা আজ দিবালোকের মত প্রতিভাত হচ্ছে। পত্রিকা অফিস শুধুমাত্র অফিস হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে না, অফিস কেন্দ্রিক সাহিত্য ও বিতর্ক ক্লাব, কনজুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন, প্রতিবন্ধি সামাজকলাণ সংস্থাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কিৃকিত কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে। পত্রিকাটি প্রতি বছর শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতি, পরিবেশ, নদ-নদী, মানবিক কর্মকান্ড, সমাজকল্যাণ ও আর্ত্ম মানবতার সেবায় সমাজে যাঁরা বিশেষ অবদান রাখছেন তাঁদেরকে বর্ষপূতি অনুষ্ঠানে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা প্রদান করে থাকেন। সাথে পাবনা জেলাসহ আশপাশের জেলা হতে যে সকল কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট নিয়মিত লেখা দিয়ে থাকেন তাঁদের অনুপ্রেরণাদানে ‘নিয়মিত লেখক সন্মাননা স্মারক’ প্রদান করেন। তাই অত্র অঞ্চলের কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট বর্ষপূতি অনুষ্ঠানের জন্য মুখিয়ে থাকেন। এটাকে পাবনাসহ দেশ-বিদেশের সুধীমহল যেমন অত্যন্ত মর্যাদার চোখে দেখছেন।
‘দৈনিক সিনসা’ পত্রিকারর রয়েছে নিজস্ব প্রেস, ছোট হলরুমসহ সুসজ্জিত অফিস, সিনসা অর্কাইভস, নিজস্ব জনবল, একঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ সংবাদকর্মী, সিনসা সাহিত্য গোষ্ঠী, সিনসা পাঠাগার, সিনসা লেখক ফোরাম, সিনসা পাঠক ফোরাম, সিনসা অনলাইন, নিজস্ব ওয়েভ সাইট- www.thedailysinsha.com, একটি ফেসবুক পেজ- Mahabub Alam Pabna, জি-মেইল sinshapb@gmail.com ইত্যাদি। ইতিহাসের বিবর্তনে ‘দৈনিক সিনসা’ গৌরবের সতেরো বছর পেরিয়ে আঠারো বছরে পদার্পণ করলো আজ। শুভ জন্মদিন ‘দৈনিক সিনসা’ দীর্ঘজীবী হও তুমি, দীর্ঘজীবী হোক দৈনিক সিনসা পরিবার, শুভকামনা সবসময়। পত্রিকাটির অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ হোক, কলেবর আরও সুসমৃদ্ধ হোক; দৈনিক সিনসা একটি আদর্শ জাতীয় পত্রিকায় পরিণত হোক এই প্রত্যাশা।

[ লেখক : ড. মো. মনছুর আলম, কবি ও প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সম্পাদক- দৈনিক সিনসা।]


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *