চিকিৎসক লাঞ্ছিতসহ নানা অভিযোগে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সহকারী পরিচালক অবাঞ্ছিত-অবরুদ্ধ

শেয়ার করুন

২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. কামরুজ্জামান নয়নসহ তার পরিবারের উপর দূর্বৃত্তদের হামলা ও মারপিটের ঘটনায় প্রশাসনিক কোন সহযোগিতা না করাসহ চিকিৎসক -কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে সহকারী পরিচালক (এডি) ডা. ওমর ফারুক মীরকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে নিজ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

রোববার (০৮ মে) সকাল সাড়ে ৮ টায় হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা এই ঘটনা ঘটায়।

ঈদের আগের দিন হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহকারী সার্জন ডা. কামরুজ্জামান নয়ন, স্ত্রী ও ছোট ভাই নিয়ে ঈশ্বরদী থেকে ফেরার পথে সদর উপজেলার টেবুনিয়া বাজারে দূর্বৃত্তের হামলার শিকার হন। এ সময় দূর্বৃত্তরা চিকিৎসক নয়ন ও তার ভাইকে বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

লাঞ্ছিত ও মারপিটের শিকার চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন বলেন, ঈদের দিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীরকে অবহিত করি। ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করে কালক্ষেপণ করেন।

চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন বলেন, আমি ও আমার ছোট ভাই হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম তিনদিন। তিনি একবারের জন্যও দেখতে আসেননি। নেননি কোন খোঁজখবর। পাবনা সদর থানায় মামলা দিতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। সহকারী পরিচালককে জানিয়েছি মামলা নিচ্ছেনা থানা। আপনি মামলা নেয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি সে জন্যও কোন সহযোগিতা করেননি।

চিকিৎসক, কর্মচারীদের সাথে দূর্ব্যবহার, অসৌজন্যমূলক আচরণ আর শাসিয়ে ও হুমকি ধামকি দিয়ে সব সময় কথা বলায় এবং অসহযোগিতামূলক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে কর্মরত চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা তাকে অবাঞ্ছিত করেছে। একই সাথে তাকে নিজ কার্যালয়ের ভিতরে তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এই কর্মসূচীতে হাসপাতালের বিভিন্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

মারপিটের শিকার চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন দাবী করেন, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর অদক্ষ এই সহকারী পরিচালকের পক্ষে জেলার বৃহৎ চিকিৎসা সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সম্ভব নয়। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, ঘটনাটি হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরে। আমাকে লিখিত ভাবে জানানো হয়নি। তবে ঘটনাটি জানার পরপরই পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছি। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করছেন।

অবাঞ্ছিত ঘোষনা ও অবরুদ্ধের বিষয়ে সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, অফিসের মধ্যে রয়েছি। বাইরে বেশকিছু চিকিৎসক ও কর্মচারীরা অবস্থান করছেন। অবরুদ্ধ নাকি অবাঞ্ছিত সেটা আমি নিশ্চিত নই।

অযোগ্য, অদক্ষ, অসৌজন্যমূলক আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, নতুন যোগদান করেছি। অনেকেই নানা তদবির, সুপারিশ, সুযোগ সুবিধা অনৈতিক ভাবে না পেয়ে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এটা তারই বর্হিপ্রকাশ।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। মামলা নয়। জিডি গ্রহনের পর নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে পুলিশ।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। তবে লোক মুখে শুনেছি সহকারী পরিচালককে অবরুদ্ধ বা অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাকে লিখিত ভাবে জানালে বিষয়টির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *