মুক্ত চেতনা ডেস্ক : পাবনা সদর উপজেলার সৈয়দ দলিল উদ্দিন (৫৫) নামে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্য হত্যার দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রোববার (০৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩ টায় পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইশরাত জাহান মুন্নি এ রায় দেন। নিহত দলিল উদ্দিন পাবনা সদর উপজেলার মজিদপুর মহল্লার মৃত সৈয়দ মঈদ উদ্দিনের ছেলে।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মজিদপুর গ্রামের নওজেশ আলীর ছেলে দেওয়ান রতন (৪২), একই গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস আলী খানের ছেলে মো. ওয়াদুদ আলী (৪০)। রায়ের সময় দুজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পুলিশবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করার পর ১৫ বছর যাবত এলাকায় একটি গভীর নলকুপসহ বেশ কিছু জিনিসপত্রের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে মজিদপুর এলাকার গভীর নলকুপের পাহারারত অবস্থায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করতে আসে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ঘটনায় তিনি বাধা দিলে শ্বাসরোধ ও কুপিয়ে হত্যা করে সেই নলকুপের ভিতরে মরদেহ ফেলে বাহিরে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান আসামিরা।
পরের দিন সকালে নিহত ব্যাক্তি বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। এক পর্যায়ে নলকুপের ভিতরের তালাবদ্ধ অবস্থায় লাশটি দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
পরের দিন ২০০০ সালের ১ নভেম্বর রাতে নিহতের ছেলে হাবিবুর রহমান কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ১০ জনের নামে চার্জশিট দাখিল হয়।
পুলিশ ফোনের কললিস্ট ধরে তদন্ত করে সবাইকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ শুনানির পর রোববার আদালত হত্যায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। বাকি ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব এমএ মতিন বলেন, রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখান থেকে দন্ডপ্রাপ্তরা নিরপরাধ হিসেবে খালাস পাবেন বলে আশা করছি।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী বলেন, এই মামলায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ৮ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।