নিজস্ব প্রতিনিধি : বর্তমান সরকারের সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নাম ভাঙ্গিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে থানায় গণ ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে এক প্রতারক। এরই প্রতিবাদে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার আমিনপুর গ্রামের শতাধিক নারী পুরুষ মামলাবাজ প্রতারক রঞ্জু শিকদার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ প্রর্দশন করেন। বিক্ষোভকারীরা কাজিরহাট-কাশিনাথপুর মহাসড়ক অরোধ করে রাখেন। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরে। পরে পুলিশের হস্তোক্ষেপে দীর্ঘ ২ ঘন্টা পরে সড়কের যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানাযায়, সম্প্রতি সময়ে মামলাবাজ প্রতারক রঞ্জু শিকদার আমিনপুর বাজার সংলগ্ন মো. হাসান নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে মাস দুয়েক আগে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি স্থানীয় ও প্রশাসনের কাছে নিজেকে ইনুর আত্মীয় বলে পরিচয় দিতে থাকেন। সম্প্রতি তিনি এলাকাতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক বিক্রিতাদের নিয়ে নারী শিশু নির্যাতন ও মাদক বিরোধী প্রতিরোধ নামে একটি সংগঠন খোলেন। এই সংগঠন খোলার পরে এলাকার সাধারন মানুষ কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি স্থানীয় কিছু কিশোরের নামে তার মেয়েকে ইভটিচিং করা অভিযোগ এনে থানাতে মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন আগে সে তার কথিত মেয়েকে আমিনপুর আয়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে ভর্তি করায়। পরবর্তীতে অভিযুক্ত তরুনদের পরিবারের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা আাদায় করে মামলাটি তুলে নেয়। এ ঘটনার পরপরই গত (১০ এপ্রিল) রঞ্জু সিকদার তার মেয়েকে নিয়ে আবারো মিথ্যা একটি গণধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে এলাকার আরো ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আমিনপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ দায়েরের ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। এলাকাবাসী এই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ ও রঞ্জু সিকদারকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন করেন।
এই প্রতারক মামলাবাজ রজু সহ তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে সেই এলাকার নিরীহ মানুষদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করাই তাদের কাজ বলে জানান গেছে। এই প্রতারক সে নিজেকে সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর মেয়ের জামাই বলে দাবি করেন। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে মামলাবাজ রঞ্জু শিকদারের স্ত্রী মোছা. ফাতেমা খাতুন এক সময় সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বাসায় গৃহ কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেই সম্পর্কের সূত্রধরে টাউট রঞ্জু নানা ধরনের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। তার কোন নির্দিষ্ট পেশা নেই বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় স্থানীয় ও জেলা পুলিশ সুপারে বিশেষে প্রতিনিধি দল প্রাথমিক তদন্ত করেও ঘটনার সত্যতা পায়নি। এ ব্যপারে আমিনপুর থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মামলা নেয়া হবে।
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে মামলা গ্রহণ করা হবে। তবে প্রকৃত ঘটনা অবশ্যই আমরা বের করবো। কোন প্রকারের নিরীহ মানুষদের হয়রানী করা হবে না। তবে যদি এই মামলা মিথ্যা হয়ে থাকে তবে মামলাকারীরদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে অজ্ঞাত কারণে তদন্ত ছাড়াই পুলিশ এই স্পর্শকাতর মামলাটি রহস্যজনকভাবে গ্রহণ করেছেন। এই বিষয়টি প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় দায়িত্বশীলেরা অবগত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এলাকার সাধারন মানুষ এই ঘটনায় ব্যপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এলাকাবাসীর বিক্ষোভের খবর পেয়ে প্রতারক রঞ্জু এলাকা থেকে অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে। তার মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।