মামুন হোসেন : ধানখেতে বেত পাতা আর কলার পাতা দিয়ে বানানো হয়েছে ছাউনি। সে ছাউনির মধ্যে রয়েছে শিকারি। আর বাঁশের কঞ্চিতে বেধে রেখেছে বক। ছাউনির ভীতর থেকে শিকারীরা বাধা বকগুলোকে নাড়াচ্ছেন। বকের ডাকাডাকি ও ডানা ঝাপটানো দেখে আশপাশ থেকে ছুটে আসছে বকের ঝাঁক। ছুটে আসা বকগুলো ছাউনিতে বসার পর নিচে থাকা শিকারি সেসব বক ধরে খাঁচায় ভরছেন। এমনই পাখি শিকারের চিত্র দেখা গেছে পাবনা চাটমোহর উপজেলার চলনবিল অধ্যুষিত গোপালপুর গ্রামে। কলার পাতার ঘর, বিষটোপ এবং জাল ফাঁদ পেতে নির্বিচারে বকসহ নানা প্রজাতির পাখি শিকার করছে এক শ্রেনির অসাধু পাখি শিকারিরা। বানের পানি নেমে যাওয়ায় অভিনব কায়দায় নির্বিচারে শিকার করা হচ্ছে বক পাখি। শিকার করা এসব পাখি প্রশাসনের দৃষ্টি ফাঁকি দিয়ে কখনও কখনও স্হানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করছেন তারা।
ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে আমন ধানে জমে থাকা পানিতে ছোট মাছসহ পোকামাকড় খেতে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সেসব পাখি শিকারে মেতে ওঠে স্থানীয় কিছু শিকারী। তারা ফাঁদ পেতে অবাধে বক শিকার করে। বিশেষ করে শিকারিদের ফাঁদে বকের ছানাগুলো বেশি ধরা পড়ে। জলাশয় আর বিলে ফাঁদ পেতে শুধু বক পাখি নয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও শিকার করা হচ্ছে। এসব পাখি প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে স্হানীয় হাট-বাজারে। অবাধে পাখি শিকার করা হলেও স্হানীয় প্রশাসন শিকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় শিকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে পরিবেশ সঙ্কটাপন্নের মুখে পড়ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সঠিক নজরদারি ও জনসচেতনতার অভাবে পাখি শিকার দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বক শিকারী সোহেল হোসেন জানান, তিনি সহ প্রায় ১০ থেকে ১২ জন প্রতিদিন বক শিকার করে থাকে। তারা প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টি বক শিকার করে থাকে বলে তারা জানান। প্রতি জোড়া বক ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় স্থানীয় হাট-বাজার, পাড়া মহল্লায় বিক্রি করে থাকেন তারা। বক শিকার করা অপরাধ সে বিষয়ে তাদের জানা নেই বলেও তারা জানান।
চাটমোহর উপজেলা উদ্ভিদ ও প্রাণীসম্পদ, উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদেরকে নিষেধ করা হবে। পুনরায় আবার যদি তারা বক শিকার করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।