মুক্ত চেতনা ডেস্ক : সরকার দেশের অসহায় অতিদরিদ্রদের মাঝে কিছু কাজের বিনিময়ে ৪০০টাকা দিন হাজিরা হিসাবে ১ম পর্যায়ের ৪০কর্ম দিবসের কার্যক্রম হাতে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় পাবনা সুজানগর উপজেলায় ২০২১/২০২২ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচির আওতায় গৃহীত ৩৩টি ওয়েজ প্রকল্পে ২কোটি ৬৭ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা, ১০টি নন-ওয়েজ প্রকল্পে ১২ লক্ষ ২৭ লক্ষ ৭৩১টাকা, সর্বমোট ২ কোটি ৭৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭৩১টাকার প্রকল্পে ৪০ কর্ম দিবসে অতিদরিদ্রদের মধ্যে পুরুষ শ্রমিক ৯০৮জন ও মহিলা শ্রমিক ৭৬৩ জন। ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে তাঁতিবন্দ ইউনিয়নে শ্রমিক ১২৬, ভায়না ১১২, সাতবাড়ীয়া ১৫৬, মানিকহাট ১৭৯, দুলাই ১৬৯, আহম্মদপুর ২১৪, রানীনগর ১৫৭, হাটখালী ১২৭, নাজিরগঞ্জ ১৯০, ও সাগরকান্দি ২৪১ জন মিলে মোট ১ হাজার ৬৬১ জন শ্রমিক কাগজে কলমে থাকলেও প্রকল্পে অর্ধেক শ্রমিক কাজে দেখা যায় না। অর্ধেক শ্রমিক চেয়ারম্যান মেম্বারদের আত্মীয়, শুভাকাঙ্খী, বন্ধু-বান্ধব, মেম্বার ও পরিষদের স্টাফদের শ্রমিকের তালিকায় নাম দিয়ে মোবাইলের বিকাশ নম্বর ব্যাবহার করে প্রকল্পের কোটি টাকা আত্মসাত করা হচ্ছে। ১০টি নন-ওয়েজ প্রকল্পে ১২ লক্ষ ২৭ হাজার ৭৩১ টাকার সড়কের ইউকালভার্ট/ রিংকালভার্ট/ ইউড্রেইন স্থাপন করার কথা থাকলেও কোথায়ও একটি কাজ হয় নাই বলে জানা যায়। এদিকে সরে জমিনে গিয়ে জানা যায় প্রকল্পর ৪০কর্ম দিবসের ১ম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যে এক মাস আগে শেষ হলেও প্রায় শতাধিক শ্রমিক এখন পর্যন্ত তাদের হাজিরা পায় নাই। কোন কোন পকল্পের সভাপতি তিনি জানেন না তিনি ঐ পকল্প বাস্তবায়ন কমিটির একজন সম্মানিত সভাপতি। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কমিটির কাগজে কলমে তার সাক্ষরের কথা বললে তিনি দাবি করেন তার সাক্ষর জাল করেছে চেয়ারম্যান/সচিব। কাগজে কলমে উল্লেক্ষিত প্রকল্প আজও পর্যন্ত কাজ হয় নাই বলে দাবি করেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির ঐ সভাপতি।
অপর দিকে বাবু ও ডলি নামে কিছু শ্রমিক বলেন তাদের মজুরী পাশ করতে মেম্বার চেয়ারম্যানদের কাছে অফিস খরচ বাবদ এক থেকে দের হাজার টাকা দিয়েছে। আবার অসহায় অতিদরিদ্র কিছু শ্রমিক বলেন তাদের কাজে যোগ দেবার কথা বলে অফিস খরচ বাবদ চেয়ারম্যান/মেম্বার ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।
নানা অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়ে হাটখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ খান ও ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তারা বলেন বিষয়টি সম্পূর্ণ সত্য নয় কিছুটা ভুলভ্রান্তি থাকলে এবার সংশোধন করা হবে।
সুজানগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মৌখিকভাবে বলেন অফিস কিছু খরচ আছে। তাছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে প্রকল্প থেকে মাঝে মাঝে কিছু দিতে হয়। এ বিষয়টি ক্যামেরায় সাক্ষাতকার নিতে চাইলে, তিনি কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশন আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনিও কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
সচেতন মহল মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার এসব অসহায় অতিদরিদ্রদের মাঝে কিছু কাজের বিনিময়ে হাজিরার টাকা আত্মসাত খুবই জঘন্যতম অপরাধ। দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজসে যেসব অনিয়ম ও দূনীর্তি হচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সেই সাথে অসহায় অতিদরিদ্রদের প্রকৃত তালিকা করে তাদের মাঝে কিছু কাজের বিনিময়ে হাজিরার টাকা বিতরণ করা উচিত।