বগুড়ার নন্দীগ্রামে কৃষকদের জন্য ফারমার্স আইটি স্কুল চালু

শেয়ার করুন

মুক্ত চেতনা ডেস্ক : কৃষির টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক তথ্যপ্রযুক্তি রয়েছে। এসব তথ্য প্রযুক্তি কৃষকের ব্যবহার উপযোগী ও সহজবোধ্য করে দ্রুততার সাথে চাষিদেরকে পোঁছে দিতে পারলে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকের আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। কৃষি লাভজনক ও ঝুঁকিমুক্ত হবে, তরুণ উদ্যোক্তারা তৈরি হবে এবং জীবনযাত্রার মান বাড়বে। কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে প্রতিটি উপজেলায় কৃষি কর্মী আছেন। কৃষি কর্মীর মাধ্যেমে সারাদেশের কৃষি পরিবারেরর মাঝে আধুনিক লাগসই প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে পারলে কৃষিতে ই-কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ই-কৃষি হলো-ইলেকট্রনিক প্রবাহের মাধ্যমে কৃষিবিষয়ক তথ্য সরবরাহের একটি আধুনিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় ইন্টারনেট, রেডিও, টেলিভিশন ও মোবাইল ফোনসহ অনান্য ইলেকট্রকি যন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য নির্ভরযোগ্যভাবে কৃষক, কৃষি পণ্য ব্যবসায়ী ও গবেষক, সম্প্রসারণ কর্মী, পরিকল্পনাবিদ সকলের নিকটে সহজে পৌঁছে দেয়া যায়। নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসারের উদ্যোগে চালু হয়েছে ফারমার্স আইটি স্কুল যা প্রশাংসার দাবিদার। কৃষি সেবা কার্যক্রমকে আরো সহজী করণ করেবে এই স্কুল।
১৪ মার্চ উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষকদের জন্য ফারমার্স আইটি স্কুল শুভ উদ্বোধনের সময় এসব কথা জানান বগুড়া জেলার জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রাম উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ, নন্দীগ্রাম উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুশরাত, উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শ্রাবনী আক্তার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.আদনান বাবু, সহকারি কমিশানর ভূমি কর্মকর্তা মো. রায়হানুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.আবু তাহের, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অপূর্ব ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
উপজেলার কৃষি অফিসার জানান, প্রতিমাসের ১ম কর্মদিবসে তত্ত্বীয় এবং ব্যবহারিক সেশনের মাধ্যমে স্কুলটি পরিচালনা করা হয়। নির্ধারিত দিনে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই স্কুলে কৃষিভিত্তিক আইটি প্রযুক্তির ওপর সেশন পরিচালনা করা হয়। কৃষকসহ যেকোন কৃষি অনুরাগী ব্যক্তি এই সেবা গ্রহন করতে পারেন। তবে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রথমে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে একজন করে তরুণ, আগ্রহী এবং উদ্যোমী শিক্ষিত কৃষক ছাত্র হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এরপর তাদেরকে খুব যতœ সহকারে কৃষি আইটি সম্পর্কিত বিষয়গুলো শেখানো হয়। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রত্যেকে দায়িত্ব দেয়া হয় পরবর্তী এক মাসের মধ্যে ১০ জন করে নতুন কৃষককে প্রশিক্ষণ লব্ধজ্ঞান সরবরাহের মাধ্যমে তাদেরকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা। এভাবে প্রতি মাসে ৬০ জন করে কৃষক এই সেবার আওতায় আসবে। ডিজিটাল বাংলাদেশে কৃষকদেরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তথা কৃষি সেবা কার্যক্রমকে আরো সহজীকরণ চাষিদের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য এই ফারমার্স আইটি স্কুল গঠন করা হয়। এখানে কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে কৃষি সেবা পাওয়া যায় তা হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে। কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোড করে কিভাবে সেবা পাওয়া যায়। অনলাইন ভিত্তিক কৃষি সেবা যেমন অনলাইনে সার সুপারিশ, হটলাইন নাম্বারে ফোন দেয়া, অনলাইনে কৃষি আবহাওয়া বার্তা, ভিডিও কলিং, কৃষি ফেসবুক গ্রুপ গঠনসহ নানা অনলাইন ভিত্তিক কৃষি সেবাগুলো এখানে শেখানো হচ্ছে। সার্বিকভাবে স্মার্ট কৃষি এবং কৃষক গড়ে তুলতে কাজ করবে এই ফারমার্স আইটি স্কুল। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিসে ১টি কৃষি লাইব্রেরী স্থাপন করা হয়েছে। লাইব্রেরী থেকে নির্ধারিত রেজিষ্টারে নিবন্ধন করে বই নিয়ে পড়তে পারবে। এ প্রক্রিয়ায় কৃষি আরো সমৃদ্ধ হবে সকলে আশা প্রকাশ করেন।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *