নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু’র বিরুদ্ধে বেড়া উপজেলার নগরবাড়ী ঘাট এলাকায় যমুনা নদীর কিছু অংশ বালু ভরাট করে প্রায় ৫একর জমিতে এমপি বাজার তৈরী করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে গঠিত একটি তদন্ত কমিটি সোমবার (২৭’সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে শুরু করে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভ‚ক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন।
অভিযুক্ত সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত টিমের আহŸায়ক ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. মো. আব্দুল মান্নান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মো. আব্দুল মান্নাফ, পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফরোজা আখতার, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহীন রেজা এবং জেলা নদী রক্ষা কমিটি পাবনার সদস্য এস এম মাহাবুব আলম এবং বেড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আব্দুস সবুর।
তদন্ত টিমের সাক্ষাৎকারে ভুক্তভোগীরা জানান, নদীগর্ভে বিলিন হওয়া নগরবাড়ীর এই স্থানে তৎকালীণ এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু নির্দেশনায় বালু ভরাট ১৬৪ টি দোকান ঘর স্থাপন করা হয়। প্রত্যেক দোকান ঘরের জন্য ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়। সরকারি সম্পত্তি এভাবে ভরাট করার ব্যাপারে অভিযুক্ত খন্দকার আজিজুল হক আরজু তার সিদ্ধান্ত সঠিক নয় বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন বালু ভরাট করার জন্য তিনি দোকান প্রতি ১লক্ষ করে টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহন করেছেন। ব্যাংকে টাকা দেওয়ার কথা অনেকেই স্বীকার করলেও ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর কেউ দিতে পারেন নি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় “ডেইলী স্টারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রত্যেক দোকানের সাইন বোর্ডে ঠিকানায়“ এমপি বাজার” লেখা দোকানের ছবি ছাপানো হয়েছে। বর্তমানে বাজারে কোন দোকানে এমপি বাজার লেখা না থাকলেও পরিত্যক্ত কয়েকটি সাইনবোর্ডে “ এমপি বাজার লেখা দেখতে পাওয়া যায়।
তদন্ত টিমের আহŸায়ক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা উপস্থিত সাবেক সংসদ সদস্যসহ ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আমাদের মতামত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিব। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন।
পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফরোজা আখতার বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করবেনা।
তদন্ত টিমের সদস্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মো. আব্দুল মান্নাফ বলেন, সড়ক ও জনপথ এ পর্যন্ত তাদের জায়গার খাজনা খারিজ দিয়ে আসছে। জমিটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পর নদীর জায়গা ভরাট করার অধিকার কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর নাই।
জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য এস এম মাহবুব আলম বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-জলাশয় পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। হাইকোটের আদেশ অমান্য করে একদিকে যেমন কোর্ট অবমাননা করা হয়েছে অন্যদিকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ায় গুরুতর অপরাধ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু।