স্টাফ রিপোর্টার : চলতি রবি মৌসুমে পাবনার সাঁথিয়ায় কৃষকেরা আমন ধান কাটার পর নভেম্বর মাসের মাঝা মাঝি সময়ে দানা জাতীয় ফসল প্রচুর পরিমানে গমের আবাদ করেছিলেন। আবহাওয়া জলবায়ু অনুকুলে থাকায় এবং সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর কয়দিন পরই শুরু হবে গম কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। এছাড়া গমের আবাদে খরচ কম হওয়ায় এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষকের মুখে হাসি। আবাদে খরচ কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি পাওয়ায় সাঁথিয়ার কৃষকেরা গম আবাদের দিকে ঝুঁকেছেন।
উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের চকপাট্টা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, গমের বীজ বপনের পর খুব বেশি সেচ দিতে হয়না। গম চাষে বোরো ধানের তুলনায় খরচও কম হয়। তিনি ২ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। তার শ্রমিক, সার, কীটনাশক বাবদ বিঘা প্রতি ৫ হাজার অর্থাৎ ২ বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। তিনি গম পাবেন প্রায় ২৬/২৮ মণ এবং খরচ বাদে তার আয় হবে প্রায় ২৩/২৪ হাজার টাকা।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গমের আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। গমের জাতের মধ্যে রয়েছে বারি গম ২৫,২৬, ২৮,২৯ ও বারি গম ৩৩ জাতের। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বারি ২৮ ও ৩৩ জাতের। গম উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৫২০ মেট্রিকটন।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী জানান, চলতি মৌসুমে শীতের স্থায়িত্ব কম হওয়ায় এবং তাপ ও রোগ সহিষ্ণু হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার ৫০ ভাগ জমিতে বারি গম ৩৩ এর আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বারি ৩৩ এ ব্লাষ্ট বা ঝুল রোগ কম হয় এবং দেরিতে আবাদ করলেও ফলন ভালো হয়। এখন সৌরভ, গৌরব, কাঞ্চন ও শতাব্দী জাতের গমের আবাদ কম হয়। তিনি আরও বলেন, বারি ৩৩ জাতের গম একটি জিংক সমৃদ্ধ খাবার। করোনাকালীণ সময়ে বারি ৩৩ জাতের গমের রুটি খাইলে দৈনন্দিন জিংকের অভাব পূরণ হয়। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত এলাকাভিত্তিক মাঠ পরিদর্শন, মাঠ দিবস, কৃষক সমাবেশ করে চাষীদের সঠিক পরামর্শ দেওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে।