সাঁথিয়ায় চাঞ্চল্যকর রাজা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

শেয়ার করুন

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়ায় চাঞ্চল্যকর রাজা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সির নির্দেশে ও জেলা পুলিশের সহযোগিতায় সাঁথিয়া থানা পুলিশের চৌকস টিম এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছেন।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) পাবনা জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই/২২ সন্ধ্যায় সাঁথিয়া উপজেলার শ্রীধরকুড়া গ্রামের মৃত সিরাজ প্রামানিকের ছেলে রাজা প্রামিানিক (৫০) তার পরিচিত অনিক হোসেন (১৮) হুদয় হোসেন (১৯) ও প্রতিবেশি জয়নাল (২৫) এর সাথে সিএনজি করে পিকনিক খাওয়ার কথা বলে কাশিনাথপুরের দিকে যায়। যথা সময়ে রাজা বাড়িতে না ফেরায় তার স্ত্রী রাশিদা স্বামীর মোবাইলে ফোন দিলে সিএনজি চালক জয়নাল ফোনটি রিসিভ করে বলেন রাজা তার মোবাইলফোনটি রেখে কোথায় যেন গেছে। ঐদিন রাতে রাজা বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করে। খোঁজাখুজির তিনদিন পর গত ২০ জুলাই/২২ সকাল ৯ টার দিকে সাঁথিয়া থনাধীন সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী সেচখালের কচুরিপানার মধ্যে রাজার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে রাজার স্ত্রী রাশিদা বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর- ২২,তারিখ ২১ /৭/২২, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড।

রহস্য উদঘাটনে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে সিএনজি চালক জয়নাল, হৃদয় হোসেন ও পিয়াস সরকারকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারের পর আসামীরা গুরুতপূর্ণ তথ্য দিলে তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে পুলিশ ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে সাঁথিয়ার বরাট সেনাকুড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে মামুন খান (২৩) আনিছ ফকিরের ছেলে আশিক ফকির (২৫)কে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। মামুন খান আদালতে ফৌজদারী কার্যবিদি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামুন খান জানায়, রাজা মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। মাদক খাওয়ার টাকা পয়সাকে কেন্দ্র করে হৃদয় ও অনিকের সাথে ঝামেলা ছিল। অপর আসামি মামুন ও জুয়েলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে সাঁথিয়া থানায় মাদকদ্রব্য আইনে একটি মামলা ছিল। এই মামলার সোর্স হিসেবে ভিকটিম রাজা ছিল বলে আসামিদের ধারনা। আর এই হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পনাকারী রনির সাথে খাসের পুকুর ও জমির দখল নিয়ে বিরোধ ছিল। বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে রাজাকে কৌশলে জয়নাল এর সিএনজি যোগে হৃদয় ও অনিককে দিয়ে ডেকে নিয়ে আসার পর গাঁজা খাওয়ার কথা বলে সোনাকুড়া বরাট গ্রামের সরকারী সেচখালের ধারে পাট ক্ষেতে নিয়ে যায় এবং রাত আনুমানিক ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে রনির নেতৃত্বে হৃদয়, জয়নাল, অনিক, জুয়েল, মামুন, আশিক এনামুল হক ও সোহেল মিলে রাজাকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ পার্শবর্তী সেচখালের কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনায় আসামি জয়নালের নিকট হতে ভিকটিম রাজার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিএনজি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *