নিজস্ব প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড বেলকুচি ও শাহজাদপুর এলাকায় সাধারন সদস্য পদে আমিনুল ইসলাম আল-আমিন তার মনোনয়ন পত্রে তথ্য গোপন করে মনোনয়ন পত্র বৈধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হলফনামায় তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই বলে উল্লেখ করেছেন, অথচ তার বিরুদ্ধে সরকারী গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা মূলক কার্যকলাপের নিমিত্তে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মামলা চলমান রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশনে জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ধারা ২০(২)(উ) ৩ মোতাবেক অতীতে তাহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন ফৌজদারি মামলার রেকর্ড আছে কিনা থাকিলে উহার রায় কি ছিল তা উল্লেখ করতে হবে। কিন্তু আল আমিন বিধি ১২ এর উপবিধি (৩) এর দফা (গ) এর উপদফা (উ) এর অধীনে হলফনামা দাখিল করেনন নাই বা দাখিলকৃত হলফনামায় অসত্য বা অসম্পূর্ন তথ্য প্রদান করেছেন যা নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত।
ঢাকা মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, মামলাটি ২০১৭ সালের তখন আমি এ থানায় ছিলাম না, তবে আমার থানায় ১১৮(৮)২০১৭ মামলাটি অনেক আগেই চারর্শীট হয়ে গেছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে যে ২০১৭ সালের ২৯ আগষ্ট রাতে মোহাম্মদপুর থানাধীন মিরপুর রোড সানরাইজ প্লাজা নামক মার্কেটের ৫ম তলার টাইম স্কয়ার নামক চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের ভিতর কতিপয় জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা গত সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কার্যকলাপের ষড়যন্ত্র মুলক গোপন বৈঠকে অংশগ্রহনকারী ২০/২৫ জন জামাত শিবিরের নেতা কর্মীদের পুলিশ ঘিরে ফেললে ৮/১০ জন পালাইয়া যায়। আটক কৃতদের মধ্যে ৫নং আসামী আমিনুল ইসলাম আল- আমিনকেও আটক করে পুলিশ। চার্জশীটেও তার নাম উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি এখন ঢাকা যুগ্ন মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ঢাকা যুগ্ন মহানগর দায়রা জজ আদালতের আইনজীবি মানজানা আফরোজ মোহনা জানান, উল্লেখিত মামলার আসামী আমিনুল ইসলাম আল- আমিন অত্র মামলার ৫নং অভিযোগপত্র ভুক্ত আসামী এবং অত্র আসামীর বিরুদ্ধে বিগত ২০/০৯/২০২১ তারিখে অভিযোগ গঠন হয় বর্তমানে মামলাটি স্বাক্ষ্য গ্রহন পর্যায়ে রয়েছে।
মনোনয়ন যাচাই বাচাই কমিটির সদস্য সিরাজগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মনোনয়নপত্রের হলফনামায় যারা তাদের তথ্য গোপন করেছেন তাদের মনোনয়ন আমরা যাচাই বাচাই করেছি। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তবে আল আমিনের নামে মাললা আছে কিনা তা হয়তো আমরা খেয়াল করতে পারিনি তাই তার মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। যদি তার নামে এরকম মামলা থাকে তাহলে মামলার কাগজপত্র সহ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করলে আবার নতুন করে আল আমিনের মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম আল-আমিন বলেন, বিষয়টি অন্য রকম ঘটনা। আর মামলার বিষয়ে এখন কোন কথা বলবোনা পরে আপনার সাথে অফিসে গিয়ে কথা বলবো।
অভিযোগ প্রদানকারী কামরুল ইসলাম বলেন, আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী আমিরুল ইসলাম আল আমিন তার হলফনামায় তথ্য গোপন করে মনোনয়ন বৈধ করে নিয়েছে, অথচ তার বিরুদ্ধে ঢাকা মোহাম্মদপুর থানায় সরকারী গুরুত্বপুর্ন স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা মূলক কার্যকলাপের নিমিত্তে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মামলাটি যুগ্ন মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তিনি সেই সময় জামাত শিবিরের নেতা হিসেবে গ্রেফতার হয়ে ছিলেন। কেন তিনি এই তথ্য গোপন করেছেন। তার জন্য আমি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেছি। আমার আবেদনটি গ্রহন করেছে। আপিল বিভাগ তার এই মনোনয়নপত্রটি নতুন করে আবার যাচাই বাচাই করে বাতিল করবে এবং তথ্য গোপনের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু তাহের মাসুদ রানা বলেন, আমার কাছে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছে। আমার এখানে আপিল বিভাগে তাদের দুজনকেই ডাকা হবে। কাগজপত্র যাচাই বাচাই করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।