স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় মালয়েশিয়ার নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করতে গিয়েছিলেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত বিভিন্ন সরকারি কলেজ শিক্ষকরা। বিদেশে মাস্টার্স করতে গিয়ে অ্যাসাইনমেন্টে লিখতে দেখাদেখি বা চুরি করেছেন শিক্ষকদের কেউ কেউ। আবার কেউ অ্যাসাইনমেন্ট জমা না দিয়ে ‘মাস্টার্স অব আর্টস ইন এডুকেশেন’ কোর্স থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অ্যাসাইনমেন্ট চুরি ও অ্যাসাইনমেন্ট জমা না দিয়ে কোর্স থেকে বহিষ্কৃত ৫ জন সরকারি কলেজ শিক্ষককে শাস্তি দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে ৫জন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধি স্থায়ীভাবে স্থগিত করে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বেতন বৃদ্ধি স্থগিত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন, টাঙ্গাইলের সরকারি এমএম কলেজের অধ্যপক তাহমিনা খান, পিরোজপুরের সোহরাওয়াদী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মহসিন গোলদার, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম শওকত আলী খান, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক অশোক কুমার ঘোষ এবং চাপাই নবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে যানা গেছে , এ সকল কর্মকর্তারা কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ইউনিভার্সিটি অব নটিংহাম মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসে মাস্টার্স অব এডুকেশন কোর্সের ১ম সেমিস্টারে অংশগ্রহণ করছিলেন। প্রশিক্ষণের মাস্টার ট্রেইনার কোহার্ট-২ এ প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিউটরদের সহযোগিতায় দুইটি মৌলিক অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে দাখিল করার শর্ত ছিল।কিন্তু এই কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক মহসিন গোলদার, এ কে এম শওকত আলী খান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিতে চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নিয়েছেন। যা একাডেমিক অফেন্স কলে গণ্য করেছে ইউনিভার্সিটি অব নটিংহাম, মালয়েশিয়া। তাই তাদের কোর্স থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর অধ্যাপক তাহমিনা খান ও সহযোগী অধ্যাপক অশোক কুমার ঘোষ অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেননি এবং কোর্সের প্রথম সেমিস্টারে ফেল করেছেন। তাই তাদেরও কোর্স থেকে বহিষ্কার করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, কোর্স থেকে বহিষ্কৃত হওয়ায় এই কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। পরে তাদের শোকজ করা হলে তারা ব্যক্তিগত শুনানি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তারা অভিযোগের বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেন নি। পরে অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদন ও ঘটনার পারিপর্শ্বিকতা বিবেচনায় অভিযুক্তদের সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণে অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাই বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থায়ীভাবে দুই বছরের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে ঐ কর্মকর্তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি দুই বছরের জন্য স্থায়ীভাবে স্থগিত করে লঘুদণ্ড দেওয়া হয়। কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।