।। ড. মো. মনছুর আলম ।।
ইছামতি নদী নামে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ১৩টি নদীর সন্ধান পাওয়া যায়। আমাদের আলোচ্য নদী পাবনা ইছামতি নদী। পাবনা জেলার হৃদয়ভূমিতে প্রবাহিত ইছামতি নদী। এক সময়ে চির-যৌবনা কৌতুকময়ী কিংবদন্তির নাম ছিল ইছামতি নদী; যা নব সৃষ্টির খেলায় উম্মাদ ছিল, সৃষ্টি করেছে অসংখ্য স্রোততধারা, জোলা-নালা, ইছামতির উদ্দাম-উচ্ছল ঢেউয়ের নাচন-দোলন, স্রোতধারার তর্জন-গর্জন সবই ছিল; কিন্তু জীবনে একটি দিনের জন্যও সে ধ্বংসলীলা সৃষ্টি করেনি, হয়নি পাবনাবাসীর দুর্ভোগের কারণ। তাইতো যুগে যুগে ইছামতির তীরে তীরে মানুষ অবলিলায় গড়ে তুলেছে তার আপন নিবাস, আসল ঠিকানা। ইছামতির দানে সোনার ফসল ভরা বিশাল মাঠ, সুবিস্তীর্ণ তৃণভূমি, নদীর তীরে গড়ে উঠা সবুজ বৃক্ষরাজি প্রকৃতির অপপরূ শোভা-সমারোহের এই নিসর্গ নীলিমায় দু’দ- দাঁড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ছুটে এসেছে প্রকৃতিপ্রেমি মানুষ। ইছামতি তীরে শুরু হয়েছে মনুষ্য সৃষ্ট সভ্যতার জয়যাত্রা; পাবনা সভ্যতার জয়যাত্রা। পাবনার সুরম্য নগর, বাজার, বন্দর, বৃক্ষশ্যামল গ্রাম, কৃষির পত্তন, শিল্পের সমৃদ্ধি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, ধর্ম-কর্ম প্রভৃতি বিকশিত হয়েছে এই ইছামতি নদীকে ঘিরেই। ইছামতি নদী তীরেই পাবনা শহর গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এই মাতৃসম-স্তন্যদাত্রী ইছামতি নদীকে ধীরে ধীরে খুবলে খোয়েছে তারই অকৃতজ্ঞ সন্তানেরা। নদীর উজাড় করা দান ভুলে এখন নদীকে গ্রাস করার খেলায় মতত তারা। এছাড়া দূরদৃষ্টিহীন সরকারি আমলাদের দুর্বুদ্ধি সাময়িক লোভ ও লাভের হিসাব বড় করে দেখতে গিয়ে ইছামতির পানি নিষ্কাষণ ও পানি প্রবাহের স্বাভাবিক পথগুলোর সাথে যথেচ্ছাচারের ক্রটি করে বসে; যার দীর্ঘ মেয়াদি ফল আজকের এই জীর্ণ-শীর্ণ মহা-সঙ্কটাপন্ন ইছামতি নদী। আর এর পূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করে কিছু সংখ্যক ভূমিদস্যু নদীদস্যু। ৮৪ কিমি দৈর্ঘ্যরে এবং ১২০ মিটার গড় প্রস্থের ইছামতি নদী এখন নিয়ন্ত্রণ, দখল, দূষণে হাঁসফাঁস করছে। কৃষির উন্নয়ন, শহররক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কিংবা নদী শাসন যে কারণেই হোক ইছামতি নদী এখন নিয়ন্ত্রিত, শৃঙ্খলে বন্দি। নিয়ন্ত্রিত বা বন্দিত্ব ইছামতির কোথাও শহররক্ষা বাঁধ, কোথাও সূতিজাল বাঁধ, কোথাও আড়াআড়ি বাঁধ, কোথাও যোগাযোগের পাকা রাস্তা, বৃহৎ অংশ জুড়ে কচুরিপানা, বৃহৎ অংশ আবর্জনার স্তুপ, ক্লিনিক্যল বর্জ্য, শিল্প বর্জ্য, পৌর বর্জ্য, কোথায়ও দখলদারদের সুউচ্চ অট্টালিকা, স্থানে স্থানে নদী শাসন করে ব্রিজ-কালভার্ট, কোথাও স্লুইস গেট, কোথায়ও আবার সেচ প্রকল্পের ক্যানেল রূপে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমান ইছামতি নদীর এই করুণ দশার পেছনে নানাবিধ কারণের মধ্যে মনুষ্য সৃষ্ট আগ্রাসনই বেশি দায়ী। এছাড়া বৈশ্বিক কারণতো আছেই। সৃষ্টির সেরা জীবের হাত হতে এখন ইছামতি নদীকে উদ্ধার করা ছাড়া আর বিকল্প নেই। ইছামতি নদীর পাবনা শহরাংশ মরতে মরতে এখন নিশ্চিহ্নের পর্যায়ে চলে এসেছে। ইছামতি নদী নিয়ে পাবনার আকাশে বাতাসে হাজারও প্রশ্ন ভেসে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন ইছামতি নদী সংস্কারের নামে ইতিপূর্বে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ ভূতে খেয়েছে এবারও তাই হবে; কেউ বলছেন নদী বইয়ের পাতায় থাকবে মাটিতে নয়; কেউ কেউ আবার একধাপ এগিয়ে বলছেন এটা নদী নয় খাল, অতএব এটা ভরে যাওয়াই ভালো। আদৌ নদী খনন বা নদী তার পূর্বের জৌলুস ফিরে পাবে কিনা, হাইকোর্টের রায়ের পরেও কেন নদী উদ্ধার হচ্ছে না, নদী সংস্কারের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ কেন ফেরত যাচ্ছে? এরকমই নানা জল্পনা-কল্পনা, নানা প্রশ্ন এখন পাবনাবাসীর মনে। উত্তর খুঁজতে আমরা সর্ব প্রথমে ইছামতি নদী নিয়ে হাইকোর্টের রায় কী ছিল; তবে তার আগে সমগ্র দেশের নদ-নদী নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টের উল্লেখযোগ্য রায়গুলো সমন্ধে প্রাথমিক ধারণা নেয়া হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশের নদ-নদী নিয়ে সর্বপ্রথম রিট মোকদ্দমা হয় ২০০৯ সালে ঢাকা ও তার আশপাশে অবস্থিত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষা বিষয়ে। রিটি পিটিশন দায়ের করেন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ৫ জন বিশিষ্ট আইনজীবী। দেশের নদ-নদী সংক্রান্ত জনস্বার্থমূলক ৩৫০৩/২০০৯ নং রিট মোকদ্দমার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২৪ ও ২৫ জুন ২০০৯ সালে রায় ঘোষিত হয়।
বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালের শুরুতে এইচআরপিবি হাইকোর্টে আরেকটি রিট করে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১ জুন হাইকোর্ট তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করে।
২০১০ সালে কর্ণফুলী নদী রক্ষা ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়েজনীয় নির্দেশনা চেয়ে এইচআরপিবি হাইকোর্টে আরেকটি রিট আবেদন করে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট মহামান্য হাইকোর্ট কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেন।
দেশের নদ-নদী রক্ষায় মহামান্য হাইকোর্টের একর পর এক যুগান্তকরী রায়, নদী রক্ষায় বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন, পরিবেশ আন্দোলন নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসে এবং দেশে নতুন নতুন নদী রক্ষা বা নদী বাঁচাও আন্দোলন গড়ে উঠা, বিভিন্ন সংগঠনেন সচেতনতামূলক প্রচারণা, মাছরাঙা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ার নদ-নদীর দুরবস্থা বিষয়ে ধারাবাহিক সম্প্রচার, বেদখল হওয়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের প্রেষণা; প্রভৃতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার নদ-নদী রক্ষায় নড়েচড়ে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২২ জুলাই জাতীয় সংসদে ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন-২০১৩’ পাশ করেন। দেশের নদ-নদী ও নদী সম্পদ রক্ষা ও আইনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে এ বছর ০৩ আগস্ট ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন’ (National River Conservation Commission Bangladesh) গঠন করেন।
২০১৫ সালে বড়াল নদী রক্ষায় ‘বড়াল নদী উদ্ধার আন্দোলন’ কমিটির এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত আরেকটি রায় প্রদান করেন। উচ্চ আদালত রায় বাস্তবায়নের জন্য বড়াল নদী উদ্ধার আন্দোলন কমিটির আমন্ত্রণে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ পানি সম্পদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী পাবনাতে আগমন করেন। বড়াল নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কাজোর কাজ কিছুই হয়নি।
২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে তুরাগ নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে এইচআরপিবি আর একটি রিট পিটিশন দায়ের করে; যার নং-১৩৯৮৯/২০১৬। ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রায়ে তুরাগ নদীকে একটি আইনি ব্যক্তি(লিগ্যাল পারসন)/আইনি সত্তা (লিগ্যাল এনটিটি/জীবন্ত সত্তা (লিভিং এনটিটি) উল্লেখ করা হয়। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় ঘোষণায় শুধু তুরাগ নয়, দেশের নব নদ-নদীই জীবন্ত সত্তা হিসেবে পরিগণিত হবে। পাশাপাশি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন-২০১৩ সংশোধনের মাধ্যমে এই কমিশনকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনাসহ মোট ১৭টি নির্দেশনা দেন।
একের পর এক রিট আবেদন, দীর্ঘ শুনানি শেষে চূড়ান্ত রায়, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের শোকজ, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নদ-নদী রক্ষায় বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের পরেও দেশের নদ-নদী রক্ষায় কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরাসরি হস্তক্ষেপে করেন। ফলে ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর একযোগে দেশের ৬৪টি জেলায় প্রায় ৪ হাজার ৪৩৯ কিলোমিটার নদ-নদী, খাল ও জলাশয় খনন ও অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পাবনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ ২৩ ডিসেম্বর, সোমবার সকাল ১০টা হতে আঞ্জুমান ব্রিজের পাশ থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে পাবনা ইছামতি নদী উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। কিন্তু এক মাসের মত উচ্ছেদ অভিযান চলার পর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হবার কারণ হিসেবে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন, কিছু আইনি জটিলতার জন্য এটি সাময়িক বন্ধ আছে। তবে খুব শিঘ্রই আইনি জটিলতা কেটে গেলে আবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। মাছরাঙা টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো চিফ উৎপল মির্জার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৪ শত অবৈধ্য স্থাপনা এবং সাড়ে তিন কিমি নদী দখলমুক্ত করা হয়। এতে সরকার প্রায় এক’শ একর জমি ফিরে পায় যার বাজারমূল্য প্রায় দুই’শ কোটি টাকা। পরে জানতে পারা যায় নদী তীরে বসবাসকারী ৪৩ জন বাদী হাইকোর্টে রিট করেছেন; যার কয়েকটির নং এরকম-৬৪/২০২০; ৪৬/২০২০ এবং ১১৬৯/২০২০। তবে দীর্ঘ শুনানি শেষে ২৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেন।
এদিকে ইছামতি নদী রক্ষায় ‘ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনা’র ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ১০৭/২০২০ একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে উক্ত মামলার রায় ঘোষণা হয়। রায়ে পাবনা জেলার পাবনা সদর, আটঘরিয়া, সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইছামতি নদীকে কেন পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেন মহামান্য হাইকোর্ট। একইসাথে সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণপূর্বক অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে কেন তাদের উচ্ছেদ করা হবে না; ক্ষতিকর স্থাপনা অপসারণ করে কেন নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি করা হবে না এবং কেন নদী দূষণ রোধ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপ্রতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান-এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত জনস্বার্থমূলক মামলার প্রাথমিক শুনানি অন্তে এ রুল জারি করেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান; পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; জেলা প্রশাসক পাবনা; জেলা পুলিশ সুপার পাবনাসহ ১৬ দপ্তরের প্রধানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসাথে ইছামতি নদীর দখলকারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এদিকে ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন উচ্চ আদলতের রায় জনসম্মেুখে তুলে ধরতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং নদী উদ্ধারে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করেন।
বাংলাদেশের অন্যান্য নদ-নদীর মত ইছামতি নদী খনন ও অবৈধ্য উচ্ছেদে অর্থ বরাদ্দ দেন সরকার। পাবনা শহর অংশে ইছামতি নদীর অভ্যন্তর ও উভয় তীরে বিদ্যমান অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ইছামতি নদীসহ শাখা খাল পুনঃখনন বাংলাবাজার ব্রিজ হতে পাবনা মহাশ্মশান পর্যন্ত কাজের জন্য ‘৬৪ টি জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় (১ম পর্যায়) (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের’ আওতায় দুইটি প্যাকেজের অনুকূলে ৩০০+৬০৬ = ৯০৬ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়। ইছামতি নদী পুনঃখনন কাজ আরম্ভের জন্য নদীর উভয় পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজে আর কোনো আইনগত বাধা না থাকায় জরুরি ভিত্তিতে পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন নদী উদ্ধার কাজ শুরু করে দেন। ইছামতি নদী আঞ্জুমান ব্রিজ থেকে মেরিল বাইপাস পর্যন্ত দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ম-লপাড়া ব্রিজ থেকে মেরিল বাইপাস পর্যন্ত নদী খনন কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু উচ্ছেদ কর্যক্রমের ৫৮ ভাগ এবং খনন কাজের ৩০ ভাগ শেষ হতে না হতেই পাবনার বিজ্ঞ সিনিয়র জজ আদালতে জনৈক ব্যক্তিগণ মামলা দায়ের করেন। এক পরিসংখ্যান হতে জানা যায় নিম্ন আদালতে এ যাবৎ ৭৭টি মামলা হয়েছে। ফলে বর্তমানে ইছামতি নদী উদ্ধার, অবৈধ্য উচ্ছেদ ও খনন কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। [ লেখক: নদী গবেষক ও সাংগঠনিক সম্পাদক, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন।]
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. মো. মনছুর আলম