নিজস্ব প্রতিনিধি : গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে পাবনার ঈশ্বরদীতে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় রহস্য উদঘাটন এবং চোরাইকৃত গহনা বিক্রয়ের নগদ ৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার সহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৯ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করা হয়।
পাবনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বুধবার (২৮ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি.) বেলা ১১টায় পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, গত ২৯ নভেম্বর ২০২২ খ্রি. দিবাগত রাত্রে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানাধীন আওতাপাড়া বাজারে মালিকা জুয়েলার্স নামক স্বর্ণের দোকানে এক দুধর্ষ চুরি হয়। আসামীরা স্বর্ণের দোকানের পাশের কাপড়ের দোকানের ভিতর ঢুকে পাশের ওয়াল ছিদ্র করে স্বর্ণের দোকানে প্রবেশ করে চুরি করে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের হয়। মামলা নং-০৪ তারিখ ০৩/১২/২০২২ খ্রি.।
এ ঘটনায় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ঈশ্বরদী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হাদিউল এবং এসআই অসিত কুমার বসাক ও এসআই সাগর কুমার সাহা স্বর্ণের দোকান চুরির ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন জেলা থেকে চুরির রহস্য উদঘাটন এবং চোরাইকৃত গহনা বিক্রয়ের নগদ ৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার সহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৯ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থানার মধ্য খোন্তাকাটা এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে ডাকাত সর্দার মো. শহিদুল হাওলাদার (৪৯), একই এলাকার মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আব্দুল মালেক (৪০), মৃত আব্দুর রহমানের মো. বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুল (৫২), মো. শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে মো. বাবুল হাওলাদার ওরফে বোকদা বাবুল (৫০), নাটোর জেলার সদর থানার পারখোলাবাড়ীয়া এলাকার মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে মো. সাঈদ (৫৭), একই থানার হৈবতপুর এলাকার মৃত দরবেশ আলী’র ছেলে মো. জালাল উদ্দিন (৩৭), বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার শেহলাবুনিয়া (মোরশেদ সড়ক) মো ফজলুল হকের ছেলে মো. রুস্তম আলী শেখ (৬০), বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থানার ধানসাগর এলাকার রতন মিস্ত্রি’র ছেলে মো. শান্ত মিস্ত্রি (২০) ও বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার খেজুরবাড়ীয়া এলাকার শম্ভুনাথ কুলু’র ছেলে বাবুল কুলু (৫৩)।
গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে চোরাইকৃত ৬ ভরি ৫ আনা স্বর্ণ, ৫০ ভরি রুপা, চোরাইকৃত স্বর্ণ বিক্রয়ের ৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি লোহার রড, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি স্টার ড্রাইভার, একটি প্লাস, একটি হাতুড়ি, একটি সোচালো লৌহ দন্ড ও আসামীদের ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আসামী মো. শহিদুল হাওলাদার বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ মোট ১০টি মামলা, আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে ৭ টি মামলা, বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুলের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা, বাবুল হাওলাদার ওরফে বোকদা বাবুলের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা সহ অন্যান্য আসামীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও আসামীদের বিরুদ্ধে বাংলাদের বিভিন্ন থানায় ১০টি ওয়ারেন্ট পেন্ডিং আছে।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা চোর/ডাকাত চক্রেয় সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকান চুরি/ডাকাতি করে স্বর্ণালংকার ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল।