চলনবিলে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ

শেয়ার করুন

মামুন হোসেন (পাবনা) : চলনবিলের দিগন্তজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ সত্যিই মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। করোনা সঙ্কটময় পরিস্থিতি কাটিয়ে কৃষক নতুন করে ঘুরে দাঁগানোর স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন সাফল্যের সোপানে রুপদান করতে কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এ বছর পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা, বিলচলনসহ বিভিন্ন মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। শুরুর দিকে পোকার আক্রমণ থাকায় এ বছরে সরিষা আবাদে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিল। পোকার আক্রমণ কাটিয়ে স্বপ্ন দেখছে ভালো ফলনের। হলুদ সরিষা ফুলে কৃষক নতুন করে স্বপ্ন বুনছে। তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। সময়মত সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের কোন প্রকার বেগ পেতে হয়নি।

চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, এ বছর আমি ৮ বিঘা সরিষার আবাদ করেছিলাম। প্রথম দিকে সরিষায় কাটুই পোকা আক্রমণে ৩ বিঘা জমি ভেঙ্গে অন্য ফসল বুনেছি। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো থাকায় সরিষার চারায় কোন ক্ষতি হয়নি, অনেক সুন্দর ফলন হবে আশা করছি।

দরাপপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি কিন্তু সরিষার বীজ রোপন করার পরেই পোকার আক্রমণে হিমশিম খেয়েছিলাম। এখন পোকার আক্রমণ থেকে অনেকটা কেটে উঠেছে। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবো।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি প্রবেশ করলেও দ্রæত মাঠ থেকে পানি নেমে যায়। মাঠের মধ্যে জলাবদ্ধতার না থাকার কারণে অনেকেই সুবিধা জনক ভাবে জমিতে সরিষা বিজ ফেলেছে। তাই এ বছর সরিষা আবাদ গেল বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ৬ হাজার ২শ ২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, ৬ হাজার ৫শ হেক্টর।
কৃষি অফিস থেকে উপজেলার প্রায় ২ হাজার কৃষককে ১ কেজি করে সরিষা বিজ ও ২০ কেজি সার দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমণ হলে কি করনীয় সে বিষয়েও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষি সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে নিয়মিত সরিশা চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা মনে করছেন করোনা সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কৃষকদের ক্ষতির কিছুটা হলেও পুষিয়ে উঠবে সরিষার আশানুরুপ ফলনের মধ্যে দিয়ে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *