স্টাফ রিপোর্টার : অস্তিত্ব সংকটে চলনবিল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে করণীয় শীর্ষক পাবনায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও একটি গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এই উদ্যোগ গ্রহন করে।
পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ ও রাজশাহী জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক জলাধার হলো চলনবিল। দেশীয় মিঠা পানির মৎসভান্ডারখ্যাত এই বিলটি ছোট বড় অসংখ্য বিলের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়েছে। নান প্রজাতির উদ্ভিদ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র এ বিলের প্রাকৃতিক গুরুত্বকে অধিক সমৃদ্ধ করেছে। ১৯০৯ খ্রি. রেলওয়ে জরিপ অনুযায়ী বিলটির আয়তন ছিল ১০৮৫ বর্গ কি. মি.। বাংলাপিডিয়া তথ্যমতে বিগত তিন যুগ ধরে এর আয়তন কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ এবং প্রতিবছর ১.৮৩% হারে কমে বর্তমানে এর আয়তন দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৭৫ বর্গ কি. মি.। রেললাইন স্থাপন, বন্যা, ও শহররক্ষা বাঁধ, ব্রিজ, কালভার্ট, স্লুইসগেট, সড়ক ওজনপথসহ বিভিন্ন স্থাপনা, জীবন-জীবিকা, মৎস সম্পদ, জীব-বৈচিত্র ও সামগ্রিক পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্বক হুমকির মুখে পড়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চলনবিল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে ইতোমধ্যে একটি গবেষণা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। গবেষণা কার্যক্রম থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং এসব সমস্যা সমাধানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যু উপস্থাপন করা হয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রি.) সকাল সাড়ে ১০টায় পাবনা শহরের প্রধান আব্দুল হামিদ সড়কের অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় চলনবিল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে বেলা’র একটি গবেষণা কার্যক্রম প্রাপ্ত তথ্য এবং মুল প্রবন্ধ প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহফুজা সুলতানা। তিনি বলেন চলনবিল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে সরকারি বিধি মোতাবেক জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশাবাদ প্রকাশ করেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোশারফ হোসেন ও পরিবেশ অধিদপ্তর পাবনা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল গফুর। চলনবিলের বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে তথ্য ভিত্তিক আলোচনা করেন চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরাল রক্ষা আন্দোলনের আহবায়ক এস এম হাবিবুর রহমান। বেলা’র পরিচিতি উপস্থাপনা করেন বেলা ঢাকা কার্যালয়ের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী এএমএম মামুন। সঞ্চালনা করেন বেলা রাজশাহী কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল।
মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন দৈনিক সিনসা সম্পাদক ও বেলা’র নেটওয়ার্ক সদস্য এস এম মাহবুব আলম, ইমাম গাযযালী গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা, শহিদ এম মন্সুর কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. আল আমিন, এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার ও বেলা’র নেটওয়ার্ক সদস্য শফিক আল কামাল, বণিক বার্তা জেলা প্রতিনিধি শফিউল আলাম দুলাল, ডেইলি স্টার প্রতিনিধি তপু আহমেদ, শহিদ আহম্মদ রফিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলেনা খাতুন, নাটোরের সাথী’র নির্বাহী পরিচালক মো. শিবলী সাদিক, ভাঙ্গুড়া উপজেলার নদি কর্মি সরকার মোহাম্মদ আলী, চাটমোহর উপজেলার নদি কর্মি বেলাল হোসেন ও পৌরসভার প্রতিনিধি রোখশানা পারভীন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক ও নদী কর্মি মাহি বিশ্বাস, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক উম্মে ছালমা কোহিনুর, বাঁচতে চাই’য়ের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রব মন্টু, আলোকিত বাংলাদেশ জেলা প্রতিনিধি কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, আইএনএস এর প্রধান সম্পাদক হাসান আলী, মাছরাঙ্গা টিভির জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম রিজু,ওয়ই ডাব্লিও সি এ সেক্রেটারি হেনা গোস্বামী, আনন্দ বাজার প্রত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শিশির ইসলাম, সাংবাদিক সাইদ উল ইসলাম, বেলা রাজশাহী কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার সুমন ও একাউন্ট অফিসার মতিউল ইসলাম, চলনবিল সংশ্লিষ্ট নদিকর্মি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ।