মুক্ত চেতনা ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা এক কোটি মানুষের জন্য টিসিবির কার্ড করে দিয়েছি। একেবারে দুস্থদের জন্য বিনা পয়সায় ৩০ কেজি চালের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বিএনপি, এরশাদ সরকার এসব কেউ করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ কিছু পায়, এটাই বাস্তবতা। মানুষ যেন কষ্ট না পায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল বলেই বিনা পয়সায় সারা দেশের মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে মানুষ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না।
রোববার (২৯ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে তিনি নগরীর মাদরাসা মাঠের জনসভায় পৌঁছান। এ সময় তাকে স্লোগানের মধ্যে দিয়ে স্বাগত জানান জ্যেষ্ঠ নেতারা। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে সমাবেশের নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উঠেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘১৯৯৬ খ্রি. সরকার গঠন করলে দেশে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যঘাটতি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি। রাজশাহী অঞ্চল আমের জন্য বিখ্যাত। আমের ওপর গবেষণা হচ্ছে, বারোমাসি আম। তাছাড়া বিদেশেও আম রপ্তানি হচ্ছে। রাজশাহীতে আমরা গ্যাসের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। ১০০টি শিল্পাঞ্চল করেছি। যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু, বন্ধ বিমানবন্দর চালু করে দেশের সব যোগাযোগ নেটওয়ার্ক চালু করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে রাজশাহী অঞ্চলে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করেছি। ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৩৭৫ কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। প্রকল্পগুলো হলো- রাজশাহী তথ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ, রাজশাহী আঞ্চলিক পিএসসি ভবন নির্মাণ কাজ, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, বিকেএসপি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ তলাবিশিষ্ট একাডেমি ভবন নির্মাণ, রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ষষ্ঠ থেকে দশম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত নির্মাণ কাজ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের হেড কোয়ার্টার নির্মাণ, রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ভবন উদ্বোধন, মোহনপুর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন, রাজশাহী সরকারি শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।
এছাড়া শেখ রাসেল শিশুপার্ক, মোহনপুর রেলক্রসিং ফ্লাইওভার, নগরীর বন্ধগেট-সিটি বাইপাস পর্যন্ত অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজ, নগরীর কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী সড়ক প্রশস্তকরণ ও সম্প্রসারণ কাজ, ভদ্রা রেলক্রসিং থেকে পারিজাত লেক হয়ে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত চার লেন সড়ক উদ্বোধন, হাইটেক পার্ক থেকে ঢালুর মোড় পর্যন্ত কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ, পুঠিয়া-বাগমারা মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ, রাজশাহী সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ, চারঘাট টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবন, রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের ৬ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, রাজশাহী সদর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন, বাগমারার ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট সড়ক, পদ্মা নদীর ড্রেজিং প্রকল্প, রাজশাহী পিটিআইয়ের বহুমুখী অডিটোরিয়াম নির্মাণ, চারঘাট ও বাঘায় পদ্মা নদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প।
বিএনপির বক্তব্যের প্রসঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নাকি পালাব, পালানোর পথ পাব না। বিএনপির উদ্দেশে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না। পালায় বিএনপির নেতারাই। আমরা যে ওয়াদা দিই, সেই ওয়াদা আমরা রক্ষা করি। ২০০৮-এর নির্বাচনে আমরা বলেছিলাম, রূপকল্প–২০২১ বাস্তবায়নের কথা। আমরা সেটি করেছি। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সচল রাখার জন্য আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন হবে। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন ওয়াদা চাই। মাঠভরা জনতা হাত তুলে ‘নৌকা, নৌকা’ বলে স্লোগান দেন। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আগামীতে আবার দেখা হবে।