মাও. শামীম আহমেদ : ঈদ আমাদের মাঝে আনন্দের বার্তা যেমন নিয়ে আসে, তেমনি নিয়ে আসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মহাসুযোগ। বিশেষত ঈদের রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতঘেরা। ঈদের রাতে জেগে থাকা এবং ইবাদত করার গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও ফজিলত বহু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেসব হাদিসের আলোকেই এখানে উল্লেখ করা হলো ঈদের রাতে ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত।
হজরত আবু উমামা রা: থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাত জাগবে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য। যেদিন (হাশরের দিন) সবার অন্তর মারা যাবে, সেদিন তার অন্তর মরবে না।
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি পাঁচ রাত জেগে থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব। সেই পাঁচটি রাত হলো এক. জিলহজ মাসের আট তারিখের রাত। দুই. জিলহজের ৯ তারিখের রাত। তিন. ঈদুল আজহার রাত। চার. ঈদুল ফিতরের রাত। পাঁচ. ১৫ শাবানের রাত।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এমন পাঁচটি রাত আছে, যে রাতে কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। রাতগুলো হলো এক. জুমার রাত। দুই. রজব মাসের প্রথম রাত। তিন. শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত। চার. ঈদুল ফিতরের রাত। পাঁচ. ঈদুল আজহার রাত।
বর্ণিত হাদিসগুলোতে ঈদের রাতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাতের কথাও বর্ণিত হয়েছে। উপরে বর্ণিত হাদিসগুলো ছাড়াও আরো অসংখ্য হাদিসে ঈদের রাতে ইবাদতের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে দিন মানুষের অন্তর মারা যাবে, সেদিন ঈদের রাতের ইবাদতকারীর অন্তর মরবে না। হাদিসের মর্মার্থ তো এই, কেয়ামতে ভয়াবহ তাণ্ডবের সময় প্রতিটি মানুষের অন্তর যখন হাশরের ময়দানে ভয় আশঙ্কা অস্থিরতায় মৃতপ্রায় হয়ে থাকবে। মানুষের হুঁশ-জ্ঞান বলতে থাকবে না কিছু। ঈদের রাতে আমলকারীর হৃদয় তখনো সজীব ও সতেজ থাকবে। সেদিন তার অন্তর মারা পড়বে না। বরং থাকবে সদা প্রফুল্ল। হৃদয়োদ্ভাসিত শান্তিসিক্ত।
ঈদের রাতের আরেকটি বড় প্রাপ্তি হলো, এ রাতে দোয়া কবুল করা হয়। কোন দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। বরং আল্লাহ তায়ালার দরবারে তা সরাসরি কবুল হয়। তাই আমরা আমাদের ইবাদতের সাথে সাথে ঈদের রাতে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের প্রয়োজন গুলো চাইতে পারি।
লেখক : মাও. শামীম আহমেদ, ইসলামী কলামিস্ট, আলোচক বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকা।