পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ

শেয়ার করুন

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ। ভবনের প্যালেস্তার খসে পড়ে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে ভুমি রেজিস্ট্রেশনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাবৃন্দ। এতে করে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ কর্মকর্তাদের জীবন রয়েছে হুমকির মুখে। এ নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার ও গণপূর্ত বিভাগের মধ্যে চিঠি চালাচালি ছাড়া দৃশ্যত তেমন অবগতি চোখে পাড়ে নি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে সরেজমিন, উপজেলা পরিষদ চত্বরের পূর্ব পাশে নির্বাচন অফিস সংলগ্ন উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয় গিয়ে দেখা যায়। পুরাতন জরাজীর্ণ একতলা ভবনের নিচের দুটি কক্ষ নিয়ে উপজেলা সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। কক্ষ দুটি ঘুরে দেখা গেছে, বিমের ও ছাদের একাধিক স্থানের প্যালেস্তার খসে পড়ে রড় বেড় হয়েছে আছে। রড সমূহে মরিচা ধরেছে এবং দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটলসহ ড্যাম ধরেছে। যে কোন মুহূর্তে প্যালেস্তার খসে পড়ে কর্মকর্তাদের প্রাণ হানিসহ অফিসের নথিপত্রের ক্ষতি সাধন হতে পারে। এমন অবস্থার মধ্যেই চলছে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ। পাশাপাশি নকল নবীশরা তাদের কপিস্টের কাজ করে চলেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ৩ তারিখে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ দেখে ভবনে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে জরুরি ভিত্তিতে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস মেরামত করার জন্য তৎকালিন সাব-রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত বিভাগ পাবনা বরাবরে আবেদন করেন। যার স্বারক নং ৬০ তারিখ-০৩-০৪-২০১৯। আবেদন পত্রেও সাব-রেজিস্ট্রার ভবনের প্যালাস্তার খসে পড়ে বিম ও ছাদের রড বেড় হয়ে পড়েছে। এতে যে কোন সময় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী ও রেজিস্ট্রশন কাজে আসা জনগণের জান মালের ক্ষতি সাধন হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবেদনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপসকারি প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গত ২০১৯ সালের মে মাসে সরেজমিন ভাঙ্গুড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার পরিদর্শন শেষে জারাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সত্যতা পান এবং ভবনটি মেরামতের অযোগ্য তাই জেলা রেজিস্ট্রার বরাবরে লিখিত পত্রে ভবনটি পরিত্যক্তের সুপারিশ করেন। এরপর কেটে গেছে প্রায় দেড় বছর। চিঠি চালাচালি ছাড়া দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণে কোনো অগ্রগতি হয় নি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট নতুন ভবন নির্মাণে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান বাচ্চু বলেন, সাব-রেজিষ্ট্রার ভবনে উপজেলার জমিজমা সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও দলিল থাকে । ঝুঁকিপূর্ণ ও ড্যামকৃত স্যাঁতস্যাঁতে ভবনে ঐ সকল নথি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবের রহমান ওয়াজেদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবন দেখেও কর্তৃপক্ষের যথাযথ নির্দেশনা না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এখানে অফিস করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, তিনি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছেন, তাই সাব-রেজিস্ট্রারের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে তিনি অবগত নন।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *