পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভূয়া সনদে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরির অভিযোগ

শেয়ার করুন

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভূয়া সনদে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মো. আব্দুর রহিম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার অষ্টমনিষা হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে। সুত্রমতে জানা যায়, আব্দুর রহিম ১৯৮৪ খ্রি. এসএসসি, ১৯৮৮ খ্রি. এইচ.এস.সি পাস করে ফরিদপুর উপজেলার বেড়হাউলিয়া মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরিতে যোগ দেন এবং একই সালে এমপিও ভুক্ত হন। ২০০১ খ্রি. টাঙ্গাইল এম এম আলী কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ২০০৯ খ্রি. দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড ডিগ্রির ভূয়া সনদ দেখিয়ে ফরিদপুর উপজেলার বৃলাহিড়ীবাড়ী ইউনিয়ন আলহাজ্ব আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তার এ ভূয়া বি.এড ডিগ্রী সনদ ও ছিল সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বাতিল হওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্পষ্ট বলা হয় ২০০৬ খ্রি. পর থেকে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সনদ বাতিল। ভুয়া সনদের বিষয়টি প্রমানিত হলে সে চাকরিচ্যুত হবে ও তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে তাই সে আলহাজ্ব আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে সেচ্ছায় পদত্যাগ করে আসেন এবং প্রায় এক বছর বিভিন্ন জায়গায় টিউশনি করেন। টিউশনি করার সুবাদে হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের সাথে তার সক্ষ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ২০১২ খ্রি. ১৭ নভেম্বরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবারো ভূয়া সনদ দিয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি নিয়ে এখন পর্যন্ত বহল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। সুত্রমতে আরও জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক ও তার সহদর ভাই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পূর্বে আব্দুর রহিমের ভূয়া সনদের বিষয়ে সব কিছু জেনেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগের পর থেকে ১০ বছরে সরকারী তহবিল থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম কোন সদুত্তর দিনে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, রহিম সাহেব দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড ডিগ্রির একটি সনদ ও পূর্বের কর্মরত প্রতিষ্ঠানের ছারপত্র দিয়ে যথারীতি নিয়মে আমাদের প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং তার সাথে সে সময় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন হয়নি। তবে তার বি.এড ডিগ্রির সনদ ভূয়া প্রমান হলে প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল রশিদ সরকার বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকের সনদ ভূয়া প্রমান হলে প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, দ্রুত ভূয়া সনদের বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আমি বলে দিচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের সনদ ভূয়া প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম মসলিম উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ভাবে তদন্ত সাপেক্ষ্যে ভ‚য়া প্রমানিত হলে সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *