মুক্ত চেতনা ডেস্ক : পাবনায় দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা ও সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রবিবার (০৭ নভেম্বর) রাতে পাবনা সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের বনকোলা বাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুই পক্ষের সর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় আ.লীগের সতন্ত্র প্রার্থীর নৌকার কর্মি সমর্থকের উপরে মসজিদে মাইকিং করে দলবদ্ধভাবে নৌকার সমর্থকদের উপরে হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নৌকার সমর্থকেরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তাদের উপরে গুলি বর্ষণ করা হয়। হামলার ঘটনায় নৌকার সমর্থক ৩জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ দুইজনকে সুজানগর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ও তিনজনকে পাবনা জেনারেল ভর্তি করা হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, সন্ধ্যার পরে রাত ৮থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তার সর্থকদের নিয়ে নিজ ইউনিয়নের বনকোলা বাজারে বসে মিটিং করছিল। এ সময় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা তাদের প্রচার মাইক নিয়ে ঐ এলাকাতে গেলে তারা দলবদ্ধভাবে তাদের উপরে হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা হয়। প্রাণ ভয়ে সকলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কিছু নৌকার সমর্থকের গায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে বেশ কিছু মানুষ আহত হয় বলে জানান তারা। এমন পরিস্থিতির কারণে এলাকাবাসির মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারও বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে।
নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শফিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমি তখন রায়পুর বাজারে ছিলাম। আমার বাড়ি সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। ঐ এলাকাতে আমার নৌকার প্রচার মাইক নিয়ে আমার কর্মীরা নির্বাচনী প্রচার কাজ করছিল। তারা এলাকায় মাইকিং করে আমাদের প্রচার মাইকসহ নৌকা পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের এলাকাতে লাইসেন্সধারী অনেক বন্দুক রয়েছে। তারাই আমাদের নেতাকর্মমী সমর্থকদের উপরে হামলা করেছে গুলিবর্ষণ করেছে। আমাদের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে যাদেরকে পাবনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কতজন আহত হয়েছে সেটা এখনও বলতে পরছিনা। আমার কোন নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা বা গুলিবর্ষণ করেনি। তারা শেখ হাসিনার দেয়া নৌকা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিক নৌকা পুড়িয়েছে দিয়েছে। তারা জামাত বিএনপির সমর্থন নিয়ে নৌকাকে পরাজিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করছে। এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা ঝামেলা করছে, সন্ত্রাসী কার্যকলাম করছে। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
আ.লীগের বিদ্রহী সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্বাস আলী মল্লিকের ছেলে ফরহাদ হোসেন বাবু হামলার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, প্রথমে তারা তাদের ক্লাবের উপর বোমা ও গুলাগুলি বর্ষণ করেছে। পরে তারা গাড়ি, শতাধিক মটর সাইকেল ও ট্রাক যোগে আমাদের বনকোলা হাটের উপরে নির্বচনী অফিসের উপর হামলা চালিয়েছে। শহর থেকে গুন্ডা ভাড়া করে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের নেতাকর্মী ও সর্থকদের উপরে অর্তকিতভাবে হামলা চালিয়েছে। নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে তারা আমাদের বাড়ির উপরে হামলা করে। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার জন্য তারা চেষ্টা করছে।
পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, রাতের ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িতে রয়েছে সিটি তদন্ত করতে হবে। ঘটনা শোনার সাথে সাথে আমাদের পুলিশ ফোর্স সেখানে পাঠানো হয়। রাতের ঘটনা সেখানে পুলিশ পৌছাতে একটু সময় লাগতে পারে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। উভয় পক্ষের চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের সাথে আমরা কথা বলছি। ঘটনায় বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছে শুনতে পেয়েছি। তবে কতজন আহত হয়েছে সেটি এখনি বলা যাচ্ছে না। তবে একজন/দুইজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে যা যা করা দরকার সেটিই আমরা করবো।