পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের ভবানীপুর জিয়লগাড়ি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম (৬৫) ও তার ছোট ভাই মতিউর রহমান (৪৫) কে হত্যার ঘটনায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল, বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও গ্রামবাসী ঝাড়ু প্রদর্শন করেন।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় ভবানীপুর জিয়লগাড়িতে নিহত জাহাঙ্গীর আলম ও তার ভাইয়ের বাড়ির সামনে আঞ্চলিক পাকা সড়কে এই ঘন্টাব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে কুশপুত্তলিকায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে শত শত নারী পুরুষ।
মানববন্ধন চলাকালে নিহত জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী জলি পারভীন বলেন আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী, ডাক্তার আমাকে পাঁচ বছর সময় দিয়েছে এর বেশিদিন আমি বাঁচব না, কিন্তু মৃত্যুর আগে যারা আমার স্বামী ও দেবরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি দেখে মরতে চাই। নিহত পুলিশ সদস্যের ছেলে জুবায়ের খন্দকার, গ্রামবাসী ও স্বজন মোস্তাক আহমেদ, হাফিজ খন্দকার, আতিকুর রহমান, মমেনা খাতুন, নাজমা খাতুনসহ অনেকেই খুনিদের ফাঁসি চেয়ে বক্তব্য দেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, হত্যার ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করলেও এখনো বেশ কিছু আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি । জোড়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তাদের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
নিহতের স্বজনেরা জানান, হত্যাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে নিহত জাহাঙ্গীর আলমের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদাবাজি ছাড়াও এলাকায় সন্ত্রাসী, জুয়া ও মাদক ছড়ানো কর্মকান্ডে তারা জড়িত ছিল। হত্যাকারিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠনের হওয়ায় এদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না। নিহত পুলিশ সদস্য তাদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তাদের দুই ভাইকে হত্যা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২২ আগস্ট সকালে সন্ত্রাসীরা জাহাঙ্গীর আলমকে প্রকাশ্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় তার ছোট ভাই মতিউর রহমান এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট তিনি মারা যান। নিহতের পুত্র জুবায়ের হোসাইন বাদি হয়ে ২২ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত মামলার প্রধান আসামী আশরাফ প্রামানিক সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহতের ছেলে জুবায়ের হোসাইন জানান, মামলা দায়েরের পর আসামীরা তাদের পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এমনকি মামলা তুলে না নিলে আরও লাশ ফেলার হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামী ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।