মনছুর আলম : পাবনা ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ মেগা প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মধ্যে ১১০.১৪ কিমি নদী পুনঃখনন কাজ, শহরে ১০ কিমি রিটেনিং ওয়াল নির্মণ, নদীর দুই পাড়ে ১০ কিমি ড্রেন নির্মাণ, ২৩টি ব্রিজ নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ, ইছামতির দুই তীরে ৫৬টি ঘাটলা নির্মাণ, উভয় তীরে ১০ কিমি ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং ৪২ হাজার ৩১০টি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ রয়েছে। এই কাজগুলোকে মোট ছয়টি স্লটে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গত ২৫ মে ২০২৪ খ্রি. থেকে ইছামতি নদীর পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। নদীর সাঁথিয়া উপজেলার মাধপুরের পাশে জগন্নাথপুর গ্রাম থেকে এই খনন কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএস আহাদ বিল্ডার্স খনন কাজ করছে এবং তত্ত্বাবধান করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। কাজের শেষ সীমা ধরা হয়েছে ৩১ মার্চ ২০২৭ খ্রি. পর্যন্ত। বিশ্বস্ত সুত্র হতে জানা গিয়েছে, এই মেগা প্রকল্পের মধ্যে ২৩টি ব্রিজ নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ কাজ অলরেডি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিসিএল বা তানভির কনস্ট্রাকশন লি. কে দেওয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই তারা পাবনা শহরের মধ্যে কাজ ধরবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যে তারা হাজীর হাটে চামড়ার গোডউনের পাশে ক্যাম্প স্থাপন করে মালামাল রাখতে শুরু করেছে। ওদিকে নদীর দুই পাড়ে ১০ কিমি ড্রেন নির্মাণ এবং উভয় তীরে ১০ কিমি ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের ডিজাইন টিম পর্যবেক্ষণ করে গিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হতে ইতোমধ্যে খসড়া ডিজাইন চলে এসেছে। ফাইনাই কপি আসলেই আশা করা যাচ্ছে ড্রেনেজ এবং উভয় তীরে ১০ কিমি ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ইছামতি নদীর আতাইকুলা-ভবানীপুর অঞ্চল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে এই খনন কাজে মোট ৭৫টি ভেক্যু মেশিন সকাল ৭:৩০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটানা খনন কাজ করে চলেছে। তারা ইতোমধ্যে জগন্নাথপুর, ভবানীপুর, শিবপুর, আতাইকুলা হয়ে সড়াডাঙ্গি পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএস আহাদ বিল্ডার্সের পরিচালকের সাথে কথা বলে জানা যায় বর্ষা মৌসুম থাকায় খনন কাজ একটু ধীরগতিতে হয়েছে। তবে এখন শুকনা মৌসুম। তাই অতিদ্রুত কাজ করে খুব তাড়াতরিই শহরের দিকে অগ্রসর হওয়া যাবে আশা করা যাচ্ছে। আপনারা জানেন, ইছামতি নদী খনন কাজ ১:২ অনুপাতে করা হচ্ছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে নদীর খনন কাজ ২০ ফিট গভীর করা হয় তবে নদীর ডাইকের স্লোপ হবে ৪০ ফিট। নদীর স্লোপ ধারা হয়েছে সর্বনি¤œ ১১.৫ মিটার। নদীর জলা ধরা হয়েছে সর্বনি¤œ ২৫.৭ মিটার। তবে সিএস মনচিত্রে নদীর জায়গা কোথাও প্রসস্থ থাকলে সেখানে জলাও বেশি হবে। নদীর উভয় পাড়ে ওয়াকওয়ে হবে সর্বনি¤œ ১০ ফিট এবং জায়গাভেদে বেশি হবে। উল্লেখ্য, ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ মেগা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।