পাবনায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ সহ গণকবর সংরক্ষণে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী সমীপে স্মারকলিপি প্রদান

শেয়ার করুন

পাবনা প্রতিনিধি : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী স্থান পাবনার পুরাতন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনকে ‘মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর’ নির্মাণ সহ সকল গণকবর সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

সোমবার (০৯’ মে) ২০২২ খ্রি. বেলা ১১টায় পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী সচেতন নাগরিক সমাজ এর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। পাবনা জেলা আ.লীগের সাবেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকনের সভাপতিত্বে ও বিআরডিবি পাবনা সদরের চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামান দোলনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা ইসমাইল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান সাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ আহম্মদ বকুল, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব ও মুক্তদৃষ্টি সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শফিক আল কামাল প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন পাবনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশ্বস্ত ও ভালবাসার জেলা। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি অনেকবার পাবনায় এসেছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সেমিনারে যোগ দিতে। ৫২’এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪’এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬’এর ৬দফা অন্দোলন, ৬৯’এর গণঅভ্যুথান, ৭০’এর নির্বাচন এবং ৭১’এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পাবনা জেলা আ.লীগের নেতৃবৃন্দ সব সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল এবং তাঁর আহবানে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের স্বৈর-সরকার বাংলার জনগণকে বিষাক্ত ভুট্টা খাইয়ে হত্যা করার প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিবাদ করায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গুলিবিদ্ধ হয় ও কারাবরণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের কালজয়ী ভাষণে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে তৎকালীন পাবনার নেতৃবৃন্দ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মরহুম আমজাদ হেসেনকে (৭০ এর নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য) আহ্বায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব বগা মিয়াকে (৭০ এর নির্বাচনে নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য) যুগ্ম আহ্বায়ক করে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে পাবনাতে একটি শক্তিশালী সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং ২৭ মার্চ পাবনায় পাক হানাদার বাহিনী প্রবেশ করে। ২৮ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে পাবনার ছাত্র যুবক এবং সাধারণ জনগন বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৯ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা ছিল “মুক্ত অঞ্চল”। এই সম্মুখ যুদ্ধটি সংগঠিত হয়েছিল তৎকালীন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনে। ভবনটিতে এখনো গুলির দাগ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

পাবনার মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও সংস্কৃতিকর্মীরা নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করার লক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই ভবনটি সংরক্ষণ করে “মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর” নির্মাণ ও সহ সকল গণকবর সংরক্ষণ করার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণ মাধ্যমে কর্মি ও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *