নিজস্ব পাবনা : পাবনায় লাল ফিতা ও কেক কেটে আনন্দ-উল্লাস করে মানবসেবার নামে অক্সিজেন ব্যাংক উদ্বোধনের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে নিন্দা, আলোচনা ও সমালচনার ঝড় উঠে।
আনন্দ-উল্লাস করে মানবসেবায় অক্সিজেন ব্যাংক উদ্বোধনের সময় তারা সিলিন্ডারে গায়ে লাল ফিতা ও সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কেকে কেটে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন ইউনিভার্সেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোটারিয়ান ড. সোহানী হোসেন পিএইচএফ এমডিসহ রোটারি ক্লাব অব রূপকথার পাবনার সব সদস্যরা। দেশে যখন করোনা শনাক্ত রোগী বাড়ছে। প্রতিদিন চলছে মৃত্যুর মিছিল।
অক্সিজেনের অভাবে ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ। ঠিক সে সময় রোববার (১১ জুলাই) সকালে ‘পাবনা ইউনিভার্সেল গ্রুপ’ নামে প্রতিষ্ঠানের অঙ্গ সংগঠন ‘পাবনা রোটার্যাক্ট ক্লাব অব রূপকথা’ নামে একটি সংগঠন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে।
সম্প্রতি এই প্রকাশিত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ১১ জুলাই রাতেই নামে বেনামে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা।
আনন্দ-উল্লাসে অক্সিজেন সিলিন্ডার উদ্বোধনের পর সেই ছবি তাদের ফেসবুক পেজসহ বিভিন্ন বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এই উল্লাসিত ছবি খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। আপলোড দেওয়া পেজ ও গ্রুপগুলোতে নানা ধরনের বিরূপ মন্তব্য আসতে থাকে। নিন্দার ঝড় উঠে এই উল্লাসিত কার্যক্রমের। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের। এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরে তারা ফেসবুকে আপলোড করা সেই আনন্দ-উল্লাসময় ছবি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়।
তবে করোনাকালীন এই সময়ে মানুষ যখন বিপদগ্রস্ত সারাদেশে করোনায় প্রতিদিনই মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। আর তখন মানবসেবার নামে উল্লাস করে অক্সিজেন ব্যাংক উদ্বোধন করেন তারা। এই বিষয়টি খুবি দৃষ্টিকুটু হয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষজন। ব্যক্তির নাম প্রচার ও উল্লাসিত ছবিই বলে দেয় তাদের মনস্বত্ব। সমাজের বিবেকবান সচেতন মানুষ এই বিষয়টিকে চরমভাবে নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করছেন।
এদিকে, মেইলে বিজ্ঞাপনের অনুলিপি আসার পরে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যান্ড আইটি শাখার ম্যানেজার হাবিবুল্লাহ জোয়াদ্দারের ফোনে কল দিলে তিনি বলেন— ‘আপনার প্রত্রিকার নাম কি?
জাতীয় না স্থানীয়,’ উত্তরে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক বলা হলে হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘ভাই এই বিজ্ঞাপনটি শুধু পাবনার স্থানীয় পত্রিকায় ছাপানোর জন্য দেওয়া হয়েছে। কোন জাতীয় প্রত্রিকায় ছাপাবেন না’। ’ কেন জাতীয় প্রত্রিকায় ছাপানো হবে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্তৃপক্ষ শুধু স্থানীয় পত্রিকায় ছাপানোর জন্য বলেছেন। এটি পাবনাবাসীর জন্য প্রতিষ্ঠানে একটি উপহার। এখানে অফার দেওয়া হয়েছে। হোম ডেলিভারি করা হবে। তাই জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে না’। বিষয়টি অক্সিজেন ব্যাংক ক্যালেঙ্কারি ধামাচার দেওয়ার জন্য এই বিজ্ঞাপন অফার দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ওই ম্যানেজার বলেন, ‘না এটা আমাদের ঈদের আগে সব স্থানীয় পত্রিকায় এই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। অক্সিজেন ব্যাংক আমাদের অন্য প্রতিষ্ঠান। এটার সঙ্গে এই বিজ্ঞাপনের কোনো সম্পর্ক নেই। ’
এদিকে বিজ্ঞাপন ও রোববারের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবি রোটারিয়ান ড. সোহানী হোসেনের ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।