শেখ কামালের জন্ম বার্ষিকী; পাবনায় নানা আয়োজন

শেয়ার করুন

।। রফিকুল ইসলাম সুইট।।
শুক্রবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী ক্রীড়া সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের ৫আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দিবসটি উপলক্ষে পাবনা জেলা প্রশাসন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ, পাবনা সরকারি টেকনিকেল স্কুর এন্ড কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসুচী গ্রহন করেছেন।
আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। তিনি ‘৬৯-র গণঅভ্যুত্থান’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন। বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন।
তিনি ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্থ বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচন্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। শেখ কামাল দেশের নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তার বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ২৬ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে নিহত হন শেখ কামাল।
দিবসটি উপলক্ষে পাবনা জেলা প্রশাসন সকাল ১০ টায় শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, ১১ টায় আলোচনাসভা ও স্মৃতিচারণ, বাদ জোহর দোয়া মাহফিল, বিকেল ৩ টায় মহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে বৃক্ষ রোপন ও বিতরন, ৪ টায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সকাল শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, আলোচনাসভা ও স্মৃতিচারণ, বাদ জোহর দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসুচী পালিত হবে।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ, পাবনা সরকারি টেকনিকেল স্কুর এন্ড কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসুচী গ্রহন করেছেন।
জেলা সকল উপজেলা প্রশাসন,বিভিন্নক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উপলক্ষে নানাবিধ কর্মসূচি পালন করবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *