সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়ায় সরকারি প্রায় সাড়ে ৫২ বিঘা অর্পিত জমির জাল দলিল ও ভূয়া মিস কেসের রায় জালিয়াতির মামলায় বৃহস্পতিবার (৮’ সেপ্টেম্বর) জালিয়াতি চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন বিজ্ঞ আদালত। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উপজেলার বিলমহিষারচর গ্রামের নূর আলী প্রামানিকের ছেলে আলাউদ্দিন প্রামানিক (৫৬), সোনাতলা গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৬৫), পিপুলিয়া গ্রামের মোজাহার হোসেনের ছেলে বকুল হোসেন, ইকরজানা গ্রামের মৃত আহের আলীর ছেলে আব্দুল লতিফ (৬০) এবং পাবনা সদরের কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত জানু সরদারের ছেলে আমিরুল ইসলাম বাবু (৪০)। এ মামলার অপর আসামি ঘুঘুদহ গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার প্রামানিকের ছেলে আবুল বাশার (৫২) ৩০ জুন/২২ রাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে হাইকোর্টের স্থায়ী জামিনে আছেন।
থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলার গৌরীগ্রাম মৌজার ‘খ’ তফশীলভুক্ত ১৬ দশমিক ৩৬ একর বা প্রায় সাড়ে ৫২ বিঘা জমির রেকর্ডীয় মালিক ছিলেন মাধব কুমার চৌধুরীর ছেলে জমিদার রাজেন্দ্র কুমার চৌধুরী। যিনি ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির আগেই ভারতে চলে যান। তার পরিত্যক্ত জমি রেকর্ডের সময় সরকার শত্রু সম্পত্তি ও পরে ‘খ’ তফশিল বা অর্পিত সমপত্তি হিসেব ঘোষনা করে নিয়ন্ত্রনে নেয়। জালিয়াতি চক্র জাল দলিল যার নং ৪৫৮২,তারিখ ২৫/০৫/১৯৬১, ৫৮১ তারিখ ০৫/০১/১৯৭৬ ইং ও উপজেলা ভ’মি অফিসের ০৪/১০/২০১৭ ইং তারিখের অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত ৪৪২(ক)/২০১৬-১৭ নং মিস কেস এর ভূয়া আদেশের রায় জালিয়াতি করে ২০২১-২২সালে হিসাব নং (২৮৫৩/২১-২২), (৫৭৩৭/২১-২২), (২৭৩৬/২১-২২), (৫৭৩৫/২১-২২), (৫৭৩৪/২১-২২) এবং (৬২০৬/২১-২২ নিজেদের নামে নামজারি বা খারিজ সম্পন্ন করেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে অফিসে ৩২২৯. ৩১৫৩, ৩২৩০,৩২৩১, ৩২৩২, ৩২৩৩ ও ৩২৭৬ নং হোল্ডিং খোলেন।
বিষয়টি সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. মনিরুজ্জামানের অনুসন্ধানে ধরা পড়লে তার নির্দেশে ৩০ জুন/২২ গৌরীগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলা রজু করেন। যার নং-৩৪/২২। মামলায় মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়। এর পর থেকে জালিয়াতি চক্রের ৫ জন সদস্য (আসামি) ২ মাস ৭ দিন পলাতাক ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) তারা পাবনা জজ কোর্টের আমলী আদালত-৫ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সম্পত্তি উদ্ধার করে খাসকরণের জন্য কার্যক্রম চলমান আছে। জেলা প্রশাসকের অনুমোদনক্রমে এই জমি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে বন্দবস্ত করা হবে। সরকারী স্বার্থ ক্ষুন্ন করার অপরাধে জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পরবর্তীতে কেউ সরকারী সম্পত্তি নিয়ে জালিয়াতি করতে না পারে সেজন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।