সায়দার হত্যার ৩৪ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : পাবনা পৌর আওয়ামীলীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সায়দার রহমান মালিথা হত্যার ৩৪ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার ও স্বজনেরা।

স্বজন হারা ব্যথায় পরিবারটি সুষ্ঠ বিচার চেয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এ্যাড. শামসুল হক টুকু এমপি’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। ডেপুটি স্পিকার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতার মা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সকল হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিবেন।

এদিকে হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচার চেয়ে (১৮ অক্টোবর) ২০২২ খ্রি. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও সচিব বরাবার পাবনার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. তসলিম হাসান সুমন ও সাধারণ সম্পাদক শাজাহান মামুনের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এছাড়াও সায়দার হত্যার অবশিষ্ট আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে পাবনা পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন পাবনা পৌর আওয়ামীলীগ ও কৃষকলীগের নেতৃবৃন্দ।

পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, শনিবার (০৮ অক্টোবর) ২০২২ খ্রি. রাতে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক আলহাজ্ব কামিল হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল বারী বাকি, শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক সরদার মিঠু আহমেদ সহ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর প্রতাপপুর কাবলি পাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে নিহতের স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও স্বজনদের গভীর সমবেদনা জানান এবং বিপদে আপদে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এতো কিছুর পরেও প্রকৃত আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে।

এ ঘটনায় পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে মঙ্গলবার (১৩’ সেপ্টেম্বর) ২০২২ খ্রি. বেলা ১১টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি. আনুমানিক দুপুর ১ টায় দিকে পাবনা সদর উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের মৃত হারান মালিথা’র ছেলে পৌর আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য ও আলোচিত ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান ওরফে সায়দার মালিথা(৫৫) কে প্রকাশ্যে দিবালোকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-২০ তারিখ-০৯/০৯/২০২২ খ্রি.। এ ঘটনায় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রোকনুজ্জামান এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযানে নামে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কক্সবাজার, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৬ জনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো পাবনা সদর থানার গাফুরিয়াবাদ গ্রামের মো. আশরাফ উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার আহম্মেদ স্বপন (৪২), একই থানার চক ছাতিয়ানি গ্রামের মৃত কালাম মালিথা’র ছেলে মোহাম্মদ আশিক মালিথা (২৮), কাশিপুর গ্রামের মো. শাজাহান খানের ছেলে মো. রিপন খান (২৭), শহরের গোপালপুর মহল্লার মাটি সড়ক এলাকার মো. আকবর হোসেনের ছেলে মো. নুরুজ্জামান রাকিব (২৪), একই এলাকার মো. রমজান আলী’র ছেলে মো. ইয়াসিন আরাফাত ইস্তি (২৬), হেমায়েতপুর চক ছাতিয়ানি গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিম মালিথা’র ছেলে মোহাম্মদ আলিফ মালিথা (২২)।

এ সময় গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি বিদেশী পিস্তল, ৩ রাউন্ড তাজা গুলি, ০২ রাউন্ড ফায়ারকৃত কার্তুজ, একটি বার্মিজ টিপ চাকু, ৩টি মোটরসাইকেল ৫টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যা চেষ্টা, চুরি, মাদক সহ ৩ থেকে ৮ মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি. হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙ্গাবাড়িয়া মুজিব বাঁধ মোড়ে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগ নেতা সায়দার রহমান মালিথাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের জন্য আলাউদ্দিন মালিথাকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নিহতের পরিবার।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *