সুজানগর ইউএনও অফিসে জামায়াতের চার নেতাকে মারধর বিএনপির

শেয়ার করুন

সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার সুজানগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে বিএনপির কয়েক নেতাকর্মীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন উপজেলা জামায়াতের চার নেতা। মারধরের শিকার জামায়াতের চার নেতা হলেন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস ও সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।

প্রত্যদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে জামায়াতের উল্লেখিত ৪ নেতা কোনো একটি কাজে ইউএনওর অফিসে যান। কিন্তু ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। সম্প্রতি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী ইউএনওর কাছে কাজে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন।

এরপরই মজিবুর রহমান, বাবু, মানিকসহ ৩০-৪০ জন ইউএনওর কক্ষে প্রবেশ করে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুসি, লাথিসহ বেদম মারধর করেন। এতে জামায়াত নেতারা গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে এই ঘটনায় উপজেলাজুড়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কেএম হেসাব উদ্দিনসহ কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে ইউএনও অফিসে ছুটে আসেন এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এ সময় উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।

এরপর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ, যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পিন্টুসহ শীর্ষ নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের রাত ১০ টা পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক চলে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। যেহেতু তার কক্ষে ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কোনো সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি-যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে আমরা সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচি দেব।

সুজানগর থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, আহতরা এখনো মামলা করেত আসেননি। তারা এলেই মামলা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *