নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা সুজানগরে দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা ও সতন্ত্র বিদ্রহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আবারো সংঘর্ষের ঘটনা হয়েছে। রবিবার (০৭ নভেম্বর) রাতে পাবনা সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের বনকোলা বাজারের উপরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর দুই পক্ষের সর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আ.লীগের বিদ্রহী সতন্ত্র প্রার্থী স্থানীয় জামাত বিএনপির নেতাকর্মীদরে সাথে নিয়ে নৌকার প্রচার মিছিলে হামলা করে। তারা প্রচার মাইকসহ প্রচারনার তৈরিকৃত নৌকা ভেঙ্গে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামাত বিএনপির অধ্যুশিত এই এলাকায় সতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে তারা অত্র এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে লোকবল একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রসতন্ত্র নিয়ে নৌকার সমর্থকদের উপরে এই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। হামলায় নৌকার সমর্থক বেশ কিছু নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ গুরুত্ব আহত হয়। সন্ত্রাসীরা এলাকায় নৌকার প্রচার কার্য না করার জন্য প্রচার কাজে ব্যববহিত ৫টি মটর সাইকেলও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
ঘটনার পরে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। এলাকায় সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শহরে থেকে জামাত বিএনপির সন্ত্রাসীদের নিয়ে গিয়ে ভোটের মাঠে কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে ঘটনাকে ধামাচা দেয়ার জন্য সোমবার দুপুরে নিজ এলাকাতে নৌকার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্রোহী প্রার্থী। সংবাদ সম্মেলনে তারা নিজেদের গা বাঁচানোর জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিষদগাড় করেন। সাংবাদিকেরা বিদ্রোহী সতন্ত্র প্রর্থী হয়ে দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার কারন জানতে চাইলে তিনি এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, দলের উপজেলা পর্যায়সহ স্থানীয় সকল দলের নেতাকর্মীরা আমাকে সমর্থন করেছে। দল করি বলে কি দলের সকল কিছু মেনে নিতে হবে এটা আমি বিশ^াস করিনা। আমি এই শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দিতা করবো।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, রাত সারে ৮ টার দিকে আওয়ামীলীগের বিদ্রহী সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তার সর্থকদের নিয়ে নিজ গ্রামের বনকোলা বাজারের উপরে বসে মিটিং করছিলো। এ সময় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা তাদের প্রচার মাইক নিয়ে মিছিল করে ঐ এলাকাতে গেলে সতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা দলবদ্ধভাবে তাদের উপরে হামলা চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা হয়। প্রাণ ভয়ে সকলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কিছু নৌকার সমর্থকের গায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছ। পরে সন্ত্রাসীরা নৌকার সমর্থকদের বেশ কিছু মটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতির কারণে এলাকাবাসির মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো শফিউর ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ঘটনা স্থল থেকে আমার বাড়ি প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। নৌকার প্রচার মাইক নিয়ে আমার কর্মীরা নির্বাচনি প্রচার কাজ করছিলো। তারা এলাকায় মাইকিং করে আমাদের প্রচার মাইকসহ নৌকা পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের এলাকাতে লাইসেন্সধারি অনেক বন্দুক রয়েছে। তারাই আমাদের নেতাকর্মী সমর্থকদের উপরে হামলা করেছে গুলিবর্ষণ করেছে। আমাদের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে যাদেরকে পাবনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কতজন আহত হয়েছে সেটা এখন বলতে পরছিনা। আমার কোন নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা বা গুলিবর্ষণ করেনি। তারা শেখ হাসিনার দেয়া নৌকা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিক নৌকা পুড়িয়েছে দিয়েছে। তারা জামাত বিএনপির সমর্থন নিয়ে নৌকাকে পরাজিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করছে। আর তাদের এই মূল সাহস যোগাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগরে একাংশ। তিনি সকল উইনিয়নে নৌকার বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি করে গোপনে ইন্দন যোগাচ্ছেন। এই নির্বাচনকে প্রশ্নবৃদ্ধ করার জন্য তারই মদদে ঝামেলা করার সাহস পাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। দল এবং প্রশাসন এই সকল সন্ত্রাসী ও দলীয় নির্দেশনা অমান্যকারীদরে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে মনে করছেন তিনি।
পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, রাতের ঘটনা কারাকারা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে সেটি তদন্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্তিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষের চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের সাথে আমরা কথা বলছি। ঘটনায় বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সকল ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে। উপজেলার সকল স্থানে আজ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের আচারন বিধি অমান্য করে কোন কাজ করলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পুরো উপজেলাতে টহল পুলিশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন স্থানে পুলিশ থাকবে। সাদা পোষাকে আমাদের সোর্স কাজ করছে। বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।