পাবনার ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন কলেজে অধ্যক্ষের অবসর; নানা অঘটন

শেয়ার করুন

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো: শহিদুজ্জামান গত ৩১ জানুয়ারি অবসরে গেছেন। অবসরে যাওয়ার আগে তার বিশ্বস্ত নানা অপকর্মের সহয়োগী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুস সালাম কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে চার্জ বুঝে দেন। তারপর
থেকেই ঘটছে নানা অঘটন।

ঐ দিন বিকেলে মো. শহিদুজ্জামান নিজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম কে তার চেয়ারে বসিয়ে দেন এবং ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারী মো. আব্দুস সালাম অধ্যক্ষের কার্যালয়ের দরজায় নেম প্লেটে মো. শহিদুজ্জামন এর নামের উপর নিজের নাম লিখে একটি কাগজ লাগিয়ে দেন।
সূত্রে জানা যায়, রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রভাবশালী নারী হিসাবে খ্যাত মো. শহিদুজ্জামানের স্ত্রী রত্না খাতুনের ইশারায় অধ্যক্ষের নেম প্লেট থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালামের নাম লেখা কাগজটি তুলে জনৈক শিক্ষক ফেলে দেন। বিষয়টি জানাজানির পর শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, নেম প্লেটটি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মো: মঞ্জুর কাদির অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামান স্যারকে উপহার হিসাবে দেন। পরে স্যার প্লেটের মুল্য হিসাবে তাকে দুই হাজার টাকা দিয়ে দেন। এজন্য নেম প্লেটটি খুলে স্যারের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি বলে দিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এমন উত্তরে শিক্ষকরা নেতিবাচক মন্তব্য করে বলেন, নেম প্লেট অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত এটা কখনো শুনিনি। এছাড়া সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামান শিক্ষকদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই আব্দুস সালামকে দায়িত্ব বুঝে দেন যাতে তার দোষ ত্রুটি প্রকাশ না পায়।তাহলে নেম প্লেটে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নাম লেখায় অধ্যক্ষের আপত্তি কোথায় ? সেটা কারও বোধগম্য হচ্ছেনা।

এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম শিক্ষকদের জানান তিনি নেম প্লেটে এখনও তার নাম লিখতে চাননা। কারণ মাউশি’র অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি।অথচ তিনি তার ফেসবুক আইডিতে মো. আব্দুস সালাম প্রিন্সিপ্যাল” পরিচয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রশ্ন শিক্ষকদের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। কলেজের শিক্ষকরা এসব বিষয়কে বাঁকা চোখে দেখছেন।

এছাড়া এক যুগ ধরে একটানা কর্তৃত্ব করা অধ্যক্ষের স্ত্রী মার্কেটিং বিভাগের রত্না খাতুন (অদৃশ্য অধ্যক্ষ বলে ক্ষ্যত) এবং তার দুলাভাই শরিফুল ইসলাম এখনও দাপটের সাথে কর্তৃত্ব করছেন।পূর্বে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শিক্ষকদের আপত্তি থাকা সত্তেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নতুন অ্যাসাইনমেন্ট কমিটি, ডিগ্রী পাস পরীক্ষা কমিটি, উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি কমিটি প্রতিটাতেই ঐ দুইজন শিক্ষককে আগের মতই বহাল রেখেছেন।

আব্দুস সালাম ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পেলেও সোমবার থেকে শুরু হওয়া ডিগ্রী পাস পরীক্ষায় কনভেনর হিসাবে সিনিয়র কাউকেই তার স্থলাভিষিক্ত করেননি। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালামকে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে সাধারণ শিক্ষকদের নিয়মমাফিক সব ধরনের দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে। এমন অবস্থা বিরাজমান থাকলে শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষক ও স্থানীয়রা।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *