ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় কৃষকেরা চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। আবহাওয়া ও জলবায়ু অনূকূলে থাকায় ফলন আশানুরুপ ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে রঙিন হাসি। এ দিকে আগামী মৌসুমে সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং চাষিরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে দাবি করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। কয়েক বছর ধরে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্ধুূদ্ধ করেন কৃষি বিভাগ। উন্নত জাতের সরিষা ৫৫ থেকে ৬০ দিন পর ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টর জমিতে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়। সেখানে আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৫’শ ৬০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২’ শ ১০ হেক্টর বেশি। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে চাষিদের উন্নত জাতের বীজ, ডিএপি (ডাই-অ্যামেনিয়াম ফসফেট) ও এম ও (পিমিউরেট অন পটাশ) সরবরাহ করেছেন।
উপজেলার খাঁনমরিচ ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের আক্কাছ আলী সরদার, আব্দুল হান্নান ও পৌর সদরের উত্তর মেন্দার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম শহীদ, ওসমান গনিসহ কয়েকজন চাষী বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করা হয়। এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করতে মোট খরচ হয় ২ হাজার ৫ শ’ (২৫০০) টাকা থেকে ৩ হাজার (৩০০০) টাকার মত। প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ৯ মন ফলন পাওয়া যায়। জমিতে সরিষা চাষের সময় সার প্রয়োগ করলে বোরো রোপনের জন্য আলাদাভাবে সার দিতে হয় না। আর প্রতিমন সরিষা বিক্রি হয় ২৭০০ থেকে ৪০০০টাকা পর্যন্ত।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. এনামুল হক বলেন, পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা সরিষা উত্তোলন করে বোরো আবাদ করতে পারেন বলে এটাকে ‘ফাও ফসল’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। সরিষার পর জমিতে বোরো ধান আবাদে সারের পরিমান খুবই কম লাগে এতে কৃষক লাভবান হয়।