পাবনার রাজাই এবারের ঈদের কোরবানির সেরা গরু ; গরুর খামারে সাবলম্বি রাজু আহমেদ

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : জেলা শহর পাবনাতে বিশাল আকৃতির একটি ষাঁড় গরু বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আদর করে খামারি তার নাম দিয়েছে পাবনার রাজা। বিশাল আকৃতির কোরবানির এই পশু দেখার জন্য অনেকেই এখন ভিড় করছে রাজুর খামারে। পাবনা সদরের জালালপুর বাগচীপাড়া গ্রামের গ্রামের রাজু কথা এখন সবার মুখে মুখে। সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে গরুর ছবি দেখে দেশের নানা প্রাপ্ত থেকে ক্রেতা আসছেন এই শিাল আকৃতির কোরবানীর পশুটি দেখার জন্য। জেলার বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে ষাঁড় গরু সংগ্রহ করে কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করে রাজু। এম আর এগ্রো ফার্ম নামে এই গরুর খামারে শুধু ষাঁড় গরু লাল পালন করা হয়। তরুণ এই খামারে এবারের ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় অর্ধশত বিভিন্ন প্রজাতের ষাঁড় গরু। অপেক্ষকৃত ভালোদাম পেলে বিক্রি করেদিবেন পাবনার রাজাসহ খামারের অন্যান্য পশু। তবে করোনাকালীন সময়ের জন্য খামারের গরু হাটে নিবেনাসে। খামার থেকে দেখে ক্রেতা পছন্দ করে গরু ক্রয় করতে পারবেন। আর সেই পশু নিজের যানবহনে বিনা খরচে পৌছে দেবে ক্রেতার বাড়িতে এমনটাই জানিয়েছেন এই তরুন উদ্যোক্তা।

শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকুরীর পেছনে না ছুটে নিজ উদ্যোগে পৈত্রিক জায়গার উপরে গড়ে তোলেন গরুর খামার। পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের জালালপুর বাগচী পাড়া গ্রামের রাজু এখন অনেকের উদাহরন। ২০১০ সাল থেকে গাভি গরু ও ছাগল দিয়ে খামারের যাত্রা শুরু করলেও ২০১৫ থেকে বানিজ্যিক ভাবে ষাঁড় গরু লালন পালন শুরু করে রাজু। গাভি গরুর পপাশাপাশি বেশিরভাগ খামারিরা ষাঁড় গরু পালন করেলেও রজু এর মধ্যে ব্যাতিক্রম। জেলার বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে বিভিন্ন প্রজাতের ষাঁড় গরু সংগ্রহ করে খামারে এনে লালান পালন করে কোরবানীর ঈদের জন্য প্রস্তুত করে থাকেনসে। সল্প অর্থ দিয়ে নিজের জায়গার উপরে খামারের যাত্রা শুরু করলেও আজ সে জেলার অন্যতম তরুন গরুর খামারি। অর্থনৈতিক ভাবে রাজু এখন সাবলম্বি। রাজুর এই খামার দেখে আজ অনেকেই তাকে অনুসরণ করছে। গত বছরে কোরবানির ঈদের সময়ে রাজু ষাঁড় গরু বিক্রি করছেন প্রায় ৮কোটি টাকার। এই বছরে ঈদের জন্য প্রায় অর্ধশত গরু প্রস্তুত করেছে সে। ইতমধ্যে বেশ কিছু গরু বিক্রি করেদিয়েছেন। বর্তমানে প্রায় ৫০টি গরু রয়েছে তার খামারে। এর মধ্যে বিশাল আকৃতির হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান প্রজাতীর একটি ষাঁড় গরু রয়েছে। যা জেলা এবং দেশের মধ্যে অন্যতম বড় ষাড় গরু। উচ্চতায় ৬ ফিট আর দৈর্ঘে সারে ১০ ফিট সাইজের বিশাল আকৃতির এই গরুটি স্কেলের ওজনে প্রায় সারে ১২ শো ৫০ কেজি। খামারির দাবি এটাই জেলা এবং দেশের মধ্যে অন্যতম বড় আকৃতির ষাঁড় গরু। এই গরুটির গায়ের রং সাদা ও চোখের কিছু অংশ কালো। খামারি ভালোবেসে নাম দিয়েছে পাবনার রাজা।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজু বেশ সৈখিন ছেলে। শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকুরির পিছে না ছুটে গ্রমেই সে এই গরুর খামার গড়ে তোলেন। রাজুর এই সফলতা দেখে এখন এলাকার অনেকেই খামার করার কথা ভাবছেন। তবে অর্থনৈক সমস্যা রয়েছে বেমিল ভাগ উদ্যোগতার। সরকারি ভাবে সহযোগিতা পেলে অনেকই চেষ্টা করতো গরুর খামার করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে।

রাজু আহম্মেদ (খামারী) পরিবারের সহযোগিতা নিয়ে ২০১০ সালে গরুর খামারের যাত্রা শুরু করি। প্রথম দিকে খামারে গাভি গুরু ছাগল, হাস মুরগী, মাছের চাষ করতাম। তবে সেখানে অনেক কষ্ট এবং খুব একলা লাভ করতে পারিনি। পরে ২০১৫ সাল থেকে বানিজ্যিক ভাবে ষাড় গরুর খমার গড়ে তুলি। বিভিন্ন জেলা থেকে ভালো জাতের ষাড় গরু সংগ্রহ করে নিজের খামারে এনে তাকে লালন পালন করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করি। তবে গরুর খাবারে বিষয়ে আমি সবসময় সচেতন থাকতাম। আমি যেমন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকি তেমনি গরুকেও রাখি। কোরবানির ঈদ ছাড়াও অন্য সময়েও আমি গরু বিক্রি করি। তবে কোরবানীর ঈদের জন্য প্রতি বছর চেষ্টা করছি একটি বড় গরু তৈরি করার। গতবার অনেক গরু ছিলো এবার তুলনামূলক কম। তবু শতাধীক গরু রয়েছে আমার। আর এবারে আমার খামারে পাবনার রাজা নামে যে গরুটি রয়েছে সেটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম বড় গরু। ভালো দাম পেলে বিক্রি করবো। তবে করোনার জন্য আমি কোন গরু হাটে নিবো না। খামার থেকেই গরু বিক্রি করে দিবো। আমার কাছে থেকে গরু কিনলে নিজ দায়িত্বে ক্রেতাদের বাড়িতে পৌছে দেয়া হবে।

ডাঃ মো. আল মামুন হোসেন (জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা) জানান, জেলায় প্রায় ২১ হাজার তালিকা ভুক্ত খামারি প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোরবানির পশু প্রস্তত রয়েছে। গত বছরেরমত এবারো অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য খামারিদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। আর জেলাতে এবারো বেশ কিছু বিশাল অকৃতির কোরবানির পশু তৈরি করেছে স্থানীয় খামারীরা। তবে করোনা কালীন সময়ের জন্য এবারো অনলাইনে কোবানির পশু বিক্রির কথা জানালেন তিনি।

গত বছর এই খামার থেকে ৩৫০টি গরু অনলাইন ও বিভিন্ন হাট বাজারের মাধ্যেমে প্রায় ৮ কোটি টাকার ষাঁড় গরু বিক্রি করেছে সে। এই বছরে করোনা মহারির জন্য গরুর পরিমান কিছুটা কম। বর্তমানে খামারে ৩০টি ও বিভিন্ন কৃষকের বাড়িতে কেনা গরু হয়েছে আরো ২০টি। সব মিলিয়ে কোটি টাকার উপরে কোরবানীর পশু বিক্িরর জন্য প্রস্তুত করেছে সে। আর খামারের সবচাইতে বড় গরু পাবনার রাজা একটু বেশি দামে লাভের আশায় লালন পালন করছেন। বর্তমানে এই পশুটির দাম উঠেছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। আশানুরুপ দাম পেলেই বিক্রি করে দিবেন পাবনার রাজাকে। গত বছরে কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভ করেছিলো ৫০ লক্ষ টাকা। এই বছরে সকল পশু বিক্রি হয়ে গেলে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লাভ থাকবে বলে জানান তিনি। গত বছর কোরবানির ঈদের পরে হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান প্রজাতীর এই ষাঁড় গরুটি প্রায় ৫লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিলেন। দীর্ঘ এক বছর লালন পালনের পরে বর্তমানে গরুটির চারদাতের বিশাল আকৃতি ধারন করেছে। করোনার জন্য খামার থেকেই সকল গরু বিক্রি করতে চানসে। ক্রেতাকে নিজের পরিবহন দিয়ে পৌছে দিবেন ক্রয়কৃত গরু।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *