স্টাফ রিপোর্টার : চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের দয়রামপুর নিজ বাড়ীর পাশ থেকে উদ্ধারকৃত ফিরোজ হত্যাকান্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় পাবনা সংবাদপত্র পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমসের আলী (৩৬)। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ২ নং থেকে ৯ নং আসামী যথাক্রমে চাটমোহর থানার দয়ারামপুর গ্রামের মৃত কিনু প্রাং এর ছেলে আবু হানিফ, সমসের, দারোগ আলী এবং সায়দুল আদু প্রাং এর ছেলে চাঁদ, দারোগ আলীর ছেলে হযরত, আবু হানিফের ছেলে গোলাম রসুল এবং আটঘরিয়া উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের গণি প্রাং এর ছেলে আনিসুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, চাটমোহর উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামের আক্কাস আলী প্রাং এর ছেলে ফিরোজ হোসেন (২০) একজন সিম ব্যবসায়ী ছিলেন। ঘটনার দিন ৩১ অক্টোবর ২০১৯ রাতে কে বা কারা তাকে হত্যা করে বাড়ীর পাশে পুকুর পাড়ে ফেলে রেখে যায়। পরের দিন ১ নভেম্বর/২০১৯ সকাল ৭ টার দিকে তার লাশ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ঘটনায় চাটমোহর থানা পুলিশ, এএসপি সার্কেল এবং পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাশ ময়না তদন্ত শেষে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় ১ নভেম্বর/২০১৯ আক্কাস আলী প্রাং আসামী অজ্ঞাত উল্লেখ করে চাটমোহর থানায় লিখিত এজাহার দেন। চাটমোহর থানা পুলিশ মৃত কিনু প্রাং এর ছেলে সমসের আলী (৩৬), জয়নাল প্রাং এর ছেলে নাসিম হোসেন ওরফে কুতুব উদ্দিন (১৮) এবং মৃত সাবান মন্ডলের ছেলে আতিক মন্ডল (১৮) কে থানায় নিয়ে যায়। থানায় ৩ দিন রাখার পর কোন ক্লু না পেয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে এ এসপি সার্কেল উল্লেখিত ৩ জনসহ আদু প্রাং এর ছেলে চাঁদ আলী প্রাং (৩৪), মৃত কিনু প্রাং এর ছেলে আলহাজ¦ আবু হানিফ প্রাং (৬৭) এবং দারোগ আলী হাজী, আ. গণি প্রাং এর ছেলে আনিছুর রহমান (৪৫), আলহাজ¦ দারোগ আলী প্রাং এর ছেলে হযরত আলী প্রাং (২২) এবং দশম শ্রেণির ছাত্রী আনিকা আক্তার পিংকি (১৪) কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে অনেককে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করা হয় বলে তারা উল্লেখ করেন। এবারেও কোন ক্লু বের করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে পিংকি খাতুনকে ১ নং করে ৯ জনকে আসামী করে জেলা পাবনার বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নং আদালতে মামলা করা হয়। যার মোং নং ১০২ /২০২০ (চাটমোহর)। মামলায় পিবিআইকে তদন্তর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মামলার ২ নং আসামী আবু হানিফ প্রাং এবং ৭ নং আসামী দারোগ আলীর ছেলে হযরত আলী কে গ্রেফতার করে কোর্টের মাধ্যমে ১ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। পরবর্তীতে কোর্ট থেকে জামিন দেয়া হয়। সর্বশেষ পিংকি খাতুনকে ২০ সেপ্টেম্বর/২০২২ রাত ১ টার দিকে তার পিতার বাড়ী আটঘরিয়া ফুলবাড়ী থেকে আটক করা হয়। আটক করে তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর কোর্টে চালান করা হয়। কোর্ট থেকে তাকে জেলখানায় পাঠানো হয় এবং একই সাথে তার শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে আসামী পক্ষ আরও জানান, ময়না তদন্তে ফিরোজ হোসেনকে গলা টিপে হত্যা করার কথা লেখা আছে। তাহলে বাদী এবং আসামী পক্ষের সন্দেহজনক সবার হাতের ছাপ নেওয়া হলেই থলের বিড়াল বেড় হয়ে আসবে।
এ ঘটনায় পিবিআই পুলিশ সুপার মো. ফজলে এলাহী জানান, তারা রহস্য উদঘাটনে খুব সতর্কতা অবলম্বন করেন। আসামীদের উপর শারিরীক নির্যাতনের কথা তিনি সত্য নহে বলে জানান।