ইছামতি খনন কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে নদীকর্মীগণ

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার : ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ মেগা প্রকল্পের মধ্যে ১১০.১৪ কিমি নদী পুনঃখনন কাজ গত ২৫ মে ২০২৪ খ্রি. থেকে শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বের ২০২৪ খ্রি.) বিকাল ৩টায় ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সভাপতি এসএম মাহাবুব আলম, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ হাবিবুর রহমান হাবিব, রিভারাইন পিপল পাবনার সভাপতি নদী গবেষক ড. মো. মনছুর আলম, এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র নেটওয়ার্ক সদস্য শফিক আল কামাল এবং কৃষ্ণপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নদীকর্মী নাছিমা খন্দকার সড়াডাঙ্গি-কাছারপুর অঞ্চলে ইছামতি নদীর খনন কাজ পরিদর্শনে যান।

তাঁরা দায়িত্বরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কোরের কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএস আহাদ বিল্ডার্সসের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে কাজের অগ্রগতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। এক সাক্ষাৎকারে এসএম মাহাবুব আলম বলেন, পাবনাবাসীর ইছামতি নদী নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল এখন ঘরে তোলার পালা। আমরা আনন্দিত যে, ইছামতি নদীর খনন কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে দিতে পেরেছি। অতএব কাজটি সঠিক এবং যথাসময়ে সুসম্পন্ন হবে এটা আমরা পাবনাবাসীকে আশ্বস্ত করতে পারি।
সুত্রে জানা যায়, ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ মেগা প্রকল্পের কাজগুলোকে মোট ছয়টি স্লটে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএস আহাদ বিল্ডার্স খনন কাজ করছে এবং তত্ত্বাবধান করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। কাজের শেষ সীমা ধরা হয়েছে ৩১ মার্চ ২০২৭ খ্রি. পর্যন্ত। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিসিএল বা তানভির কনস্ট্রাকশন লি. ২৩টি ব্রিজ নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ কাজ খুব শিঘ্রই শুরু করবে। নদীর দুই পাড়ে ১০ কিমি ড্রেন নির্মাণ এবং উভয় তীরে ১০ কিমি ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজের ডিজাইন হয়ে গিয়েছে। আরও জানা যায়, নদীর দুই তীরে প্রথমে ড্রেন হবে, তারপর ওয়াকওয়ে, তারপার গার্ড ওয়াল বা রিটেইনিং ওয়াল; তবে নদীর তীরবাহুর স্লোপ অথবা স্লোপে ব্লকের কথা বলা ছিল না বা প্রকল্পের মধ্যে ছিল না। এখন নতুন করে সেটা পাশ হয়েছে অর্থাৎ পাবনাবাসীর জন্য সুসংবাদ এই যে, শহরের মধ্যে এই ১০ কিমি নদীর উভয় তীরে ব্লক ফেলে স্লোপ তৈরী করা হবে। নদীর সার্বিক স্লোপ ধারা হয়েছে সর্বনিম্ন ১১.৫ মিটার। ইছামতি নদীর সড়াডাঙ্গি ও কাছারপুর অঞ্চল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে এই খনন কাজে মোট ১১১টি ভেক্যু মেশিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি একটানা খনন কাজ করে চলেছে। আমরা গত সপ্তাহে পর্যবেক্ষণ করে পেয়েছিলাম ৭৫টি; আর এক সাপ্তাহের ব্যবধানে ৩৬টি ভেক্যু সংযোজন হওয়া মানে খনন কাজ খুব দ্রুতগতিতেই চলছে। তারা ইতোমধ্যে ১৮ কিমি খনন কাজের অগ্রগতি হয়েছে। জগন্নাথপুর, ভবানীপুর, শিবপুর, আতাইকুলা, সড়াডাঙ্গি, পীরপুর, কাছারপুর হয়ে বর্তমানে মৌগ্রাম পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে আরও জানা যায়, শহরের ম-লপাড়া থেকে চরশিবরামপুর, কোষাখালী, ভোমরা কোল হয়ে রূপপুর চ্যানেল অগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হবে। মূলত এই রুটে কিছু জমি অধিগ্রহণ করতে হবে বিধায় একটু দেরি হলো। নদীর সকল জায়গায় জলা ধরা হয়েছে সর্বনিম্ন ২৫.৭ মিটার। তবে সিএস মনচিত্রে নদীর জায়গা কোথাও প্রসস্থ থাকলে সেখানে জলাও বেশি হবে। উল্লেখ্য, ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ এই মেগা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *