ঈশ্বরদীতে করোনায় আক্রান্তের হার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের হার প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে মাইকিং, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানেটারি বিতরন ও মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস ঈশ্বরদী শহরে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
জনসচেতনা ও ভ্রাম্যমান আদালতের প্রথম দিনেই মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে ৮জনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের নিকট থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
ঈশ^রদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এফএ আসমা খান কালের কন্ঠকে জানান, ঈশ^রদীতে দিনকে দিন করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের হার বেড়ে চলেছে। যা চরম উৎবেগের। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় ঈশ^রদীতে ৬৮জনের পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এই নিয়ে সরকারীভাবে ঈশ^রদীতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২৬জন এবং বেসরকারীভাবে ১০৩৯জন।
ডাক্তার আসমা খান আরো জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে ৩৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজেটিভ এবং বেসরকারীভাবে ১০৯৩ জনের সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
ঈশ^রদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস কালের কন্ঠকে জানান, ঈশ্বরদীতে করোনা পজেটিভের হার খুবই উদ্বেগজনক। ঈশ্বরদী কেপিআই এলাকা। এই কারণে এই মর্হুত্যে লক-ডাউনের চিন্তা করা হচ্ছে না। তাই বিকল্প পথ হিসেবে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং করা হচ্ছে। মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শহরে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানেটার বিতরণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৮জনকে জরিমানা করে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যহত রাখা হবে বলেও জানান ইউএনও।
এদিকে পাবনা সিভিল সার্জন ডাক্তার মনিসর চৌধুরী জানান, সারাদেশের মতো পাবনাতেও হঠাৎ করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গেছে। মহামারির প্রথম দিকে পাবনাতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বর্তমানে জেলায় দৈনিক সংক্রমণ ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক অবাধে চলাফেরা করার কারণে ঈশ্বরদীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাবনা জেলার মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর প্রায় এক তৃতীয়াংশই ঈশ্বরদী উপজেলায়। যার প্রভার পুরো পাবনা জেলায় সংক্রমিত হয়েছে।
এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সুত্র মতে, ঈশ্বরদীতে করোনা আক্রান্তের পরিমান দিনকে দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পে কর্মরত বিদেশীদের পক্ষ থেকে উৎবেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই কারণে বিদেশীদের বসবাসকৃত গ্রিনসিটি গতকাল ( বৃহস্পতিবার) থেকে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। রাশিয়ানসহ বিদেশী নাগরিকগণ গাড়ি করে প্রকল্পে কাজের জন্য যাবেন আর গাড়িতে করেই গ্রিনসিটিতে ফিরবেন। এরপর গ্রিন সিটি থেকে আর বের হতে পারবেন না। কারণ স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলা জনসাধারণের জন্য যেন নতুন করে সংক্রমিত না হতে পারে সেই জন্য এই লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।