ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনতাই হওয়ার চার ঘণ্টার ব্যবধানে কিশোর গ্যাংয়ের ৫ সদস্যসহ টাকা উদ্ধার করেছে রূপপুর ফাঁড়ির পুলিশ।
এ সময় ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র ও ছিনতাই হওয়া ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ মার্চ) রাত ৮টায় ঈশ্বরদী থানায় ছিনতাই এবং অস্ত্র আইনে দুটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। শনিবার (১২ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং সদস্যদের পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হবে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ শুক্রবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নুরুল্লাাপুর রাজ্জাক মৃধার বাড়ির সামনে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আটক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলেন ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের বুরামপুর গ্রামের রবি বিশ্বাসের ছেলে রিমেল বিশ্বাস (২০) মৃত সেন্টু বিশ্বাসের ছেলে রোহান বিশ্বাস (২০) কামালপুর গ্রামের মৃত মজনু মোল¬ার ছেলে রনি মোল¬া (২০) নুরুল¬াপুর গ্রামের ছলিম সরদারের ছেলে সুজন আলী (২৮) পাকশী ইউনিয়নের চর-রূপপুর গ্রামের সিরাজুল বিশ্বাসের লিমন বিশ্বাস (২১। ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের দিয়াড় সাহাপুর সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের এমপি মোড়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট দোকান বন্ধ করে ব্যাগে করে নগদ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমি ও আমার ভাতিজা অয়ন হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। নুরুল্লাপুর রাজ্জাক মৃধার বাড়ির সামনে পৌঁছামাত্র ৫/৬ জন পিস্তল ধরে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার ব্যাগসহ মোবাইলের ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ সময় ধস্তাধস্তি ও চিৎকারে লক্ষ্মীকুন্ডার নুরুল¬াপুরের ছলিম সরদারের ছেলে সুজনকে চিনতে পারলেও ওই সময় তার নাম ধরে ডাক দেইনি। তাৎক্ষণিক বিষয়টি রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে অবগত করি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঈশ্বরদী থানা পুলিশ আমাদের দেওয়া সেই তথ্য মতে প্রথমে সুজনকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে একটি শুটারগানসহ ছিনতাই হওয়া ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, সাব-ইন্সপেক্টর আতিকুল ইসলাম জানান, ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করার পর ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারের অভিযানে নামে পুলিশ। প্রথমে সুজনকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে রিমেল, রায়হান, লিমন, রনি মোল্লাকে রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে আটক করি। তাদের দেওয়া তথ্যমতে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের বুরামপুর গ্রামের রিমেল এবং রোহান বিশ্বাসের বাড়ি থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি শুটারগান উদ্ধার করা হয়।ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হাদিউল ইসলাম জানান, ঈশ্বরদী উপজেলায় ছিনতাইকারী কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা বেশ সক্রিয়। ছিনতাই, দখল চাঁদাবাজি মামলায় তাদের বিভিন্ন সময় আটক করে কারাগারে পাঠানো অব্যাহত রয়েছে। জামিনে মুক্ত হয়ে ফের তারা অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। ঈশ্বরদী বিট পুলিশের মাধ্যমে আমরা এলাকাবাসীকে সচেতন করার কাজ অব্যাহত রেখেছি। আসলে সন্ধ্যার পর প্রতিটি পরিবারের সন্তান কোথায় যায়? কি করে? অভিভাবকদের একটু সচেতন হওয়া দরকার, থানা পুলিশের পাশাপাশি। তাহলে সামাজিক অপরাধগুলো কমে আসবে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই হওয়ার মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ সদস্যকে আটক করে ছিনতাই হওয়া টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানায় ছিনতাই ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।
ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ আরও জানান, শনিবার (১২ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে কিশোর গ্যাং দলের পাঁচ সদস্যকে পাবনা জেল হাজতে পাঠানো হবে। ঈশ্বরদী থানা পুলিশ কিশোর গ্যাং সদস্যদের অপরাধ দমনে বিট পুলিশের মাধ্যমে কাজ অব্যাহত রেখেছে। পুলিশের পাশাপাশি এলাকাবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।