মুক্ত চেতনা ডেস্ক : পাবনার সুজানগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলে সরকারের জলমহাল বন্দোবস্ত নীতিমালা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া, খড়াজাল ও সোঁতিজাল ও চায়না জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে প্রচুর ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায় নদ-নদী, খাল বিলে মাছ চলাচলের পথে আড়াআড়ি বাধ বা স্থায়ী ভাবে বেড়া দেওয়া মৎস্য আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ ইঞ্চির ছোট নলা মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ ও ঘনিয়া) এবং ৩০ সেন্টিমিটারের ছোট বোয়াল ও আইড় মাছ ধরা বা বিক্রি দন্ডণীয় অপরাধ। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এ বিধি লংঘল করলে এক থেকে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যেতে পারে। বৃহস্পতিবার (০২’ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে এসব আইন লঙ্ঘন করে গাজনার বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে খড়াজাল, সোঁতিজাল, চায়না জাল ও বাঁশের বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গাজনার বিলের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ করে খয়রান ব্রীজ এলাকাসহ বাদাই, উলাট গ্রামের কাছে ও হাটখালীতে এভাবে মাছ ধরছেন অনেকেই। খয়রান গ্রামের পাশে বিলে খড়াজাল দিয়ে মাছ ধরার কাজে জড়িত কাদের হোসেন বলেন, এভাবে আমার মত অনেকেই এই বিলে ফাঁদ পেতে অবৈধ জাল দিয়ে ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ শিকার করছেন।
বিল পাড়ের মানুষেরা অভিযোগ করে জানান, উপজেলা মৎস্য দপ্তরের উদাসীনতার কারণেই উপজেলার গাজনার বিলে এভাবে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে। সুজানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান আলী জানান, সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে এভাবে মাছ শিকারের কারণে বিলে মাছের বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না। এ কারণে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায় না। স্থানীয় মৎস্য জীবিরাও বেকার হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্তকর্তা নূর কাজমীর জামান বলেন, গাজনার বিলে অবৈধভাবে মাছ শিকার রোধ করতে ইতিমধ্যে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। মানুষদের সচেতনতা তৈরিতে মাইকিং করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সুজানগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলী জানান, মাছের বংশ বিস্তার বৃদ্ধি এবং দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় আইন লঙ্ঘনকারীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।