চাটমোহর চলনবিলে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু

শেয়ার করুন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : দেশের উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার হিসাবে সুপরিচিত চলনবিলে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। চলনবিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে সবুজ ও সোনালী শীষে সমারোহ। হিমেল বাতাস ও মিষ্টি রোদে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ। প্রতিটি মাঠে মাঠে এখন কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে গেছে। সেই সাথে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে চলনবিলের কৃষকরা।

চলতি মৌসুমে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বোরো ধানের দৃশ্য দেখে মনে হবে আবহমান বাংলার চিরায়িত রূপের কথা। দৃষ্টিসীমা ছাপিয়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে বোরো ধানের সোনালি শীষ। সেই দোলায় লুকিয়ে রয়েছে চলনবিল অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন। চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহরসহ অন্যান্য উপজেলাতে কৃষকরা প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যেই শুরু করেছেন আগাম জাতের বোরো ধান কাটা। প্রচন্ড খরতাপ আর ঝড় ও শিলা বৃষ্টি হতে পারে সে কারনেই কিছুটা আগে ভাগেই শুরু করেছেন ধান কাটা। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভালো হচ্ছে সেই সাথে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক।
আগামী সপ্তাহেই পুরোদমে শুরু হবে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব। সেই উৎসবকে ঘিরে চলছে ধান কাটার শ্রমিক সংগ্রহ, খোলা পরিষ্কার ও মাড়াই যন্ত্র মেরামতসহ জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার নানা প্রস্তুতি। বসে নেই কৃষক পরিবারের সদস্যরা।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহর উপজেলায় ৯ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ বেশি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় প্রায় ৩শ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে। উপজেলায় ৭ হাজার কৃষককে হাইব্রিড ধানের বীজ ও ১ হাজার ২শ কৃষককে উফশী জাতের বোরো ধান বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১০ টি বীজ উৎপাদন প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। এ এলাকায় সাধারণত ব্রিধান-২৮,২৯ এছাড়াও উন্নত ৫০. ৫৮, ৬৪, ৮১, ৮৪, ৮৯, ৯২, ৯৬ সহ বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান চাষ হচ্ছে।

বাঘলবাড়ি গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, এ বছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত ২ বিঘা ধান কর্তন করেছেন। ধানের ফলন এবার অনেক ভালো পাচ্ছেন। দামও অনেক ভালো। এ সময় দুইদিন বৃষ্টি হলেও ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। ঠিক মতো ধান কাটতে পারলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার মনের স্বপ্নটা পূরণ হবে।

কৃষক মোতালেব হোসেন জানান, বোরো ধানের চারা রোপন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনেই ফলন ভালো হয়েছে। রোগ-বালাই নাই বললেই চলে। শুধু শেষের দিকে অত্যাধিক খরতাপের কারনে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে ও জমিতে পানি সেচ দিত কষ্ট হয়েছে। আশা করছি এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, সবেমাত্র ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ধানের ভালো ফলন হবে। এখন আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। চাষীরা ভালোভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবেন। আর ক’দিন পরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। এবার বড় ধরনের ঝড় বা শিলাবৃষ্টি না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনসহ ন্যায্যমুল্য পাবেন কৃষকরা। কৃষি অফিস থেকে সার্বিক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শসহ দিয়ে যাচ্ছি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *