দেশের উন্নয়ন হলেও মাহমুদ আলীর ভাগ্যে জোটেনি মাথা গোজার ঠাঁই

শেয়ার করুন

শিশির ইসলাম : পাবনা সদর উপজেলা মালিগাছা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড’র বাসিন্দা মাহমুদ আলী (৭০)। বয়সের ভারে চলাফেরা করা কষ্টকর, দৃষ্টি শক্তি কমে গেছে, ভালো করে তাকাতেও পারেন না, একটা ঘরের জন্য সরকারি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘুরেছেন দিনের পর দিন কিন্তু এখনো ভাগ্যে জোটেনি মাথা গোজার ঠাঁই।

দু-একজন আশ্বাস দিলে পরে তারাও আর কথা রাখেনি, ভাঙ্গা ঘরেই তার বসবাস, দরজা লাগানোরও সামর্থ্য হয়নি। সম্পদ বলতে দুই শতক জমি। যখন শারিরিক সক্ষমতা ছিল ক্ষেতে খামারে কাজ করতে পারতেন, সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে জায়গাটি কিনলেও ঘর করার সামর্থ্য হয়নি।

সংসার চলে স্হানীয় একটা মসজিদ’র জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুষ্ঠীর চাউল তুলেন এবং সেখান থেকে সপ্তাহে ৭ কেজি চাল পেয়ে থাকেন। তা দিয়ে চলে স্ত্রী আর মাহমুদ আলীর খাওয়া পড়া। মাছ মাংস তো দূরের কথা এমন দিন আছে সাধারণ সবজি কেনারও সামর্থ্য হয়না।

পরিবার বলতে স্ত্রী, একজন পালিত কন্যা আছে বিয়ে দিয়েছেন মেয়েটাও প্রায় অসুস্থ। স্ত্রী মানুষের বাড়িতে ঝি এর কাজ করেন। সেও কানে শুনেনা অসুস্থ। ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য নেই।

এ বিষয়ে মাহমুদ আলীর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বলেন আমি গরীব বলে আমার কেউ নেই, একটা ঘরের লাইগা চেয়াম্যান থেকে শুরু করে কত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কিন্তু কেউ কোন ব্যবস্হা করেনি। ঘরের চাল ভাঙা অনেকটা অংশ পলিথিন দেওয়া, সেটা নষ্ট হয়ে পানি পরে। বৃষ্টি আসলে ঘর পানিতে ভেসে যায়, ঘরে থাকতে পারিনা, ঘুমাতে পারিনা, আল্লাহ আমার সুদিন দিলোনা, কত মানুষ আশা দিলো কিন্তু কেউ আর পরে দেখেনি। শরীরে এখন রোগ লেগেই থাকে। কিছুদিন আগে এক্সিডেন্ট করে পা ভেঙে গিয়েছিলো ৩ মাস বিছানায় পরে ছিলাম, কোন দিন একবেলা ভাত জোটেনি, সরকারি কত সুযোগ সুভবধা মানুষ পায়, আমার জন্য চেয়ারম্যান এর ভাতা কার্ডও হয়নি, আমার আর কত বয়স হলে ভাতা পাব? কত গরীব হলে জুটবে আমার ঘর? এই বলে অঝোরে কান্না করেন তিনি। জানিনা কবে দিন আসবে? আমার একটা ঘর এর ব্যবস্হা হলে অন্তত খেয়ে না খেয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম, এই ভাঙ্গা ঘরের দরজাটাও লাগাতে পারিনি। আমার জন্য কেউ কিছু করেনি, এই মসজিদ এর চাউল না পেলে হয়তো না খেয়ে মরতে হত।

এ বিষয়টি নিয়ে মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী’র সাথে মুঠোফোনে কথা বলার কয়েকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *