পাবনায় ২৪ ঘন্টায় ১৯২ জনের করোনা সনাক্ত; উপসর্গে মৃত্যু ১১ জনের

শেয়ার করুন

মুক্ত চেতনা ডেস্ক : পাবনায় রেকর্ড ভেঙেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত দুবছরের মধ্যে বুধবার (৩০’জুন) সর্বোচ্চ ১৭৭ জন সনাক্তের পরদিনই ভেঙেছে সংক্রমণের রেকর্ড। একদিন পরই বৃহস্পতিবার (০১’ জুলাই) জেলায় করোনা সনাক্ত হয়েছে ১৯২ জনের শরীরে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গে শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসকসহ কমপক্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে একজন গত রাতে জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। ঈশ্বরদীতে ২ জন, সদর উপজেলায় ৫ জন, সাঁথিয়ায় ২ জন এবং বেড়া উপজেলায় ২ জনের উপসর্গে মৃত্যুর কথা স্থানীয়রা জানালেও, মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি স্বাস্থ্যবিভাগ।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী, জেলায় ১২১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন ১৯২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই পাবনায় সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড। তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় এবং জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মানায় পাবনাতেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। সচেতন না হলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়বে। আক্রান্তের একটি বড় অংশ করোনা পরীক্ষা না করা এবং হাসপাতালের বাইরে মারা যাওয়ায় সঠিক পরিসংখ্যান জানা সম্ভব হচ্ছে না।

আইন শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতার মধ্য দিয়ে পাবনায় শুরু হয়েছে প্রথম দিনের ‘কঠোর’ লকডাউন। প্রধান সড়ক গুলোতে জনসমাগম কম হলেও, খুলেছে অলিগলির দোকানপাট, চায়ের স্টল। পৌর শহরের বাইরে চলাচল করছে ইজিবাইক ও সিএনজি অটোরিক্সার মত যন্ত্র চালিত বাহনও।
সরেজমিনে, পাবনার পৌর এলাকার কালাঁচাদপাড়া, বেলতলা রোড, গোপালপুর, দিলালপুর, দক্ষিণ আটুয়া, কাচারীপাড়া, মন্ডলপাড়া, বাবলাতলা, আরিফপুর ও বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায় সকালের গুড়ি গুড়ি বৃৃষ্টির মাঝেই খুলেছে পাড়া মহল্লার দোকানপাট। চায়ের দোকানগুলিতে ভীড় করে আড্ডা দিচ্ছেন নানা বয়সের মানুষ। অনেকেই বের হয়েছেন আইনশৃংখলা বাহিনী কতটা কঠোর হয় তা দেখতে। শহরের লাইব্রেরী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা সবজির বাজার বসানো হয়েছে পাশ^বর্তী কৃষ্ণপুর বালিকা বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে। ক্রেতা সমাগম কম, তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মানা হচ্ছে না। ক্রেতা বিক্রেতার অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। একই চিত্র শহরের বড় বাজার, মাসুম বাজারেও। খাদ্য ও নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়াও নিউ মার্কেট, প্রেসক্লাব গলি, দইবাজার, বড় বাজার এলাকার দোকানপাট খুলেছে ব্যবসায়ীরা। আইনশৃংখলা বাহিনী দেখলে সাটার বন্ধ করে ভিতরে অবস্থান নিচ্ছেন তারা, চলে গেলে পাল্লা অর্ধেক খুলে বেচাকেনা করছেন দোকানীরা।

এদিকে, সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। বাইরে আসা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তারা। তবে, বাস টার্মিনাল ও হাজিরহাট এলাকায় কিছু সিএনজি অটোরিক্সা, ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে লকডাউনে সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ও পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। এ সময় তারা অযৌক্তিক কারণে বের হওয়া এবং ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।

এ সময় পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বের হলে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। আমরা সতর্ক করেছি, এরপরও আইন অমান্য করলে গ্রেফতার করা হবে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *