স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)’র উদ্যোগে রাজশাহীর বালিয়াপুকুর বিদ্যানিকেতনে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পরিহার এবং বিকল্প ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ’ প্রতিপাদ্যে এক জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৩ আগস্ট ২০২৩ খ্রি.) বালিয়াপুকুর বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক মো. মোখলেছুর রহমান সভাপতিত্বে এবং বেলা’র রাজশাহী কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে বক্তব্য রাখেন, বালিয়াপুকুর বিদ্যানিকেতনের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুদ রানা, রুমা রানী পাল, মো. মোকলেছুর রহমান এবং শিক্ষার্থী মাসুদ হাসান খান, ফাতিমা তুজ জোহরা, নুসাইবা তাবাসসুম, মো. সিয়াম হোসেন, সামিহা ইসলাম, সানজাতুল ইসলাম, রাফিয়া খাতুন, নিশাত তাসলিম প্রমুখ। বিদ্যানিকেতনের ৮০ জনের অধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্লাস্টিক কৃত্রিমভাবে তৈরি একটি পলিমার। এটি জীবাশ্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি করা হয়। আর এই প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে সাগরের তলদেশ থেকে মাউন্ট এভারেস্ট পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বত্র, এমনকি মেরু অঞ্চলেও প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে।
আধুনিক বিশ্বে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে প্লাস্টিক দূষণ। ইতোমধ্যেই পৃথিবীর মাটি, পানি, বায়ুমন্ডল, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও মানব স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এই প্লাস্টিক দূষণ। একবার ব্যবহার্য পলিথিন/প্লাস্টিকপণ্য পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে।
বিভিন্ন জরিপের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় চল্লিশ কোটি টনেরও বেশি প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদিত হয়। ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কিছু অংশ রিসাইকেল করা হলেও বেশিরভাগই বর্জ্য হিসেবে প্রকৃতি ও পরিবেশে থেকে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব প্লাস্টিক বর্জ্য চারশত বছরেরও অধিক সময় পর্যন্ত পরিবেশে বিরাজ করে মাইক্রোপ্লাস্টিক নামের ক্ষুদ্রাংশে পরিণত হয়ে বাতাস এবং খাদ্যশৃংখলের মাধ্যমে মানব দেহে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের স্বস্থ্যঝুঁকির জন্ম দেয়। এভাবেই প্লাস্টিক জীব ও প্রকৃতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে থাকে।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্লাস্টিকপণ্য অধিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশবান্ধব মাটি, কাঁসা, পিতল, সিলভার ইত্যাদি পণ্যসামগ্রী আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই প্লাস্টিক দূষণের কারণ, ক্ষতিকর দিক এবং বিকল্প ব্যবহার বিষয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবহারকারীদের সরকারিভাবে প্রণোদনা দিতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধে দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকদ্রব্য ব্যবহার কমাতে সবাইকে তৎপর হতে হবে এবং ব্যবহৃত প্লাস্টিকপণ্য যত্রতত্র না ফেলে সেগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। সর্বোপরি প্লাস্টিকপণ্যের ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ বান্ধব বিকল্প ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমাতে ভূমিকা রাখতে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে।