নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় সড়কের কাজ শুরুর আগে ড্রেন নির্মানের প্রতিবাদে ও সরকারি সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, সীমানা নির্দ্ধারণ পূর্বক সড়কের দু’পাশ দিয়ে প্রশস্তকরণের কাজ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভোগীরা। রোববার (২৬ জুন) উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ওহিদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন, শিক্ষক নুরুজ্জামান, আখতার রহমান ও নাসির উদ্দীন। তারা বলেন, ১৯৭৪ সানের নকশা অনুযায়ী রাজশাহীর চারঘাট হয়ে বাঘা বাজারের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরদী যাতায়াতের সরকারি সড়কের সীমানার মধ্যে দোকান, মার্কেট ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করে অবৈধভাবে দখলে রাখার ফলে যান চলাচলসহ জনসাধারনের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। এর পরেও সেগুলো উচ্ছেদ না করেই ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। যদি সরকারি জায়গায় স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই ড্রেন নির্মাণ করা হয়, তাহলে সড়কের প্রশস্তকরণের সময় সেই অবৈধ দখল আগের মতোই থাকবে আর ব্যক্তিমালিকানা জমি সড়কে চলে যাবে। দাবি করা হয়, সরকারি জায়গার অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ পূর্বক রাস্তার উত্তরের শেষ সীমানা দিয়ে ড্রেন নির্মাণের এবং রাস্তার দুই ধারের সীমানা নির্দ্ধারন করে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ করার। এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য (বাঘা-চারঘাট) ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, রাজশাহী জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহি অফিসার, উপজেলার সহকারি কমিশনার(ভুমি) ও বাঘা পৌর মেয়রকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘা পৌর এলাকার বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে বাঘা বাজার হয়ে পূর্বে বটতলা এলাকা পর্যন্ত কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৭৮৪ মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। কাজ শুরু করা হয়েছে বটতলা এলাকার কিছুটা পশ্চিম প্রান্ত থেকে। ৪ফিট প্রশস্থ ড্রেনের সাইট ওয়াল হবে ৮ফিটের কমবেশি। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভার পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প এর কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোকন কন্সট্রাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। কাজটি বাস্তবায়ন করছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর, অর্থায়নে-জিওবি, বিশ্বব্যাংক ও এআইআইবি।
অপরদিকে, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর থেকে চারঘাট-বাঘা হয়ে নাটোরের লালপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলমান। ৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর এই সড়কটি রয়েছে ১৮ ফুট চওড়া। নতুন সড়ক হবে ৩৪ ফুট চওড়া কিংবা তার বেশি। কিন্তু সরকারি রাস্তার সীমানা নির্দ্ধারণ ও সরকারি সড়কের সীমানায় অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ না করেই বাঘা পৌরসভা এলাকায় ড্রেন নির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে বাঘা বাজার হয়ে পূর্বে বটতলা এলাকা পর্যন্ত রাস্তার উত্তরে অধিকাংশ স্থাপনা রয়েছে, সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠান। রাস্তার দক্ষিনে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং হাট-বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট সুপারভাইজার ডিপক কুমার রায় বলেন, পৌরসভা কর্তৃক যে সীমানা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই সীমানায় কাজ করা হচ্ছে। বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জনস্বার্থে সরকারি সীমানা নির্দ্ধারণ পূর্বক ড্রেন ও সড়কের কাজ করার জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নিলে আমি কি করতে পারি।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আখতার জেলায় মিটিং এ যাওয়ায় তার কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, মানববন্ধনের স্বারকলীপির কপি পেয়েছেন।