রাহেনুল ইসলাম মিঠু (ঈশ্বরদী) : শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি করা মামলার রায়ে পাঁচ বছর আগে ফাঁসি, যাবজ্জীবন ও ১০ বছর মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ২৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১১ আদালতের বিচারক এ এস এম আব্দুল মবিন ও বিচারক মোঃ মাহমুদ হাসান তালুকদারের যৌথ বেঞ্চ কারাবন্দি ঈশ্বরদী বিএনপি’র ৪৭ নেতাকর্মীর মধ্যে ৩০ জনকে জামিনের আদেশ দেন। এই আদেশের প্রেক্ষিতে রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) পাবনা কারগার থেকে মুক্তিলাভ করেন ১২ নেতা-কর্মী। অন্য ১৮ জন রাজশাহী কারাগারে থাকায় সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) মুক্তি পাবেন বলে জানা গেছে।
রবিবার কারামুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বিশ্বাস, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আনোয়ার হোসেন জনি, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন, মোহাম্মদ বরকত, হাফিজুর রহমান মুকুল, আবুল কাশেম, লিটন মাল, আহমোদ ফয়সাল রিয়াজী রনো, এনাম, সিমুয়া শামসুর রহমান, আজাদ হোসেন খোকন।
সহস্রাধিক বিএনপি’র নেতা-কর্মী শোভাযাত্রা করে কারামুক্তীদের নিয়ে আসেন পাবনা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে। সেখানে জেলা বিএনপি’র আহব্বায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ জেলার নেতারা কারামুক্তদের ফুলেল শুভেচ্ছা
জানান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ।
পরে কারামুক্ত নেতাদের নিয়ে ঈশ্বরদীতে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। দীর্ঘদিন পর কারামুক্ত নেতাকর্মীদের একনজর দেখার জন্য বিভিন্ন মোড় সরগরম হয়ে উঠে। কারামুক্তদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট জামিল আক্তার এলাহী জানান, ত্রিশ বছর (১৯৯৪ সালে) আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় ২০১৯ সালের ৩ জুলাই চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ফরমায়েশি রায় দেন পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক রস্তম আলী। ফরমায়েশি এই রায়ে স্থানীয় বিএনপি’র মোট ৫২ জন নেতাকর্মীর মধ্যে ৯ জনকে ফাঁসি, ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। বিচার চলাকালীন ৪ জন এবং রায়ের পর কারাগারে মারা গেছেন ৩ জন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২ জন জামিনে মুক্ত রয়েছেন।