বিশেষ প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রায় ৩শত গুণী লেখকের লেখা নিয়ে ভারতের ত্রিপুরার রাজ্যে থেকে আবারও আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করছে আগরতলাবাসী। স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে ঢাকায় প্রস্তুতিমূলক সভা ও আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার সেগুনবাগিচার তোপখানা রোডের চট্টগ্রাম ভবন মিলনায়তনে এ প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহাকে আহ্বায়ক ও বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক শাহাদৎ হোসেন নিপুকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন- কবি আসলাম সানী, শাহজালাল ফিরোজ ও মাহজাবীন রেজা চৌধুরী।
প্রস্তুতিমূলক এ সভায় অংশ নেয় ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি, আগরতলা’র সভাপতি শিক্ষাবিদ দেবব্রত দেব রায়ের নেতৃত্বে ১৩ জনের একটি প্রতিনিধি দল। এ প্রতিনিধি দলে আরও আছেন প্রধান সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ড. মুজাহিদ রহমান, লেখক নিয়তি রায় বর্মন, ড. দিলীপ সরকার, ড. বীথিকা চৌধুরী, কবি মৌসুমী কর, নন্দিতা ভট্টাচার্য, গল্পকার বিল্লাল হোসেন, কণ্ঠশিল্পী স্বর্ণিমা রায়, কবি জহর দেবনাথ, সমাজ সেবক বিশ্বজিত রায় চৌধুরী, শিবানী ভট্টাচার্য ও প্রিয়তিশা দেব রায়।
গঠিত আহ্বায়ক কমিটি আলোচনা করে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ও কয়েকটি উপকমিটি গঠন করবে বলে প্রস্তুতি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় কবি অসীম সাহার সভাপতিত্বে ও শাহাদৎ নিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের অন্যতম উদ্যোক্তা, আগরতলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. দেবব্রত দেব রায়, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থের প্রধান সম্পাদক ড. মুজাহিদ রহমান, কবি আসলাম সানী, ফিরোজ আহমেদ, ড. বীথিকা চৌধুরী, লেখক নিয়তি রায় বর্মন, সমাজ সেবক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাদিদ রেজা চৌধুরী, লেখক খোরশেদ আলম বিপ্লব ও ডি কে সৈকত প্রমুখ।
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কবি অঞ্জনা সাহা, কবি মাহবুবা লাকি, রংপুরের পীরগঞ্জের সুলতান আহমেদ সোনা, টাঙ্গাইলের মনোজ কান্তি সরকার, সিরাজগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক মান্নান রায়হান, কলকাতার মলয় মুখোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী মহাদেব ঘোষ, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাদা মহিউদ্দিন, নড়াইলের সৈয়দ খাইরুল আলম, কথা সাহিত্যিক সিরাজুল ইসলাম মুনির, অধ্যাপক রোকসানা আক্তার সাথী, অধ্যাপক জাকির হোসেন জামাল, পটুয়াখালীর মাসুদ আলম বাবুল, রিতা আক্তার, ড. সবুজ শামীম আহসান, পাবনার লেখক সাংবাদিক শফিক আল কামাল, চট্টগ্রামের কবি শিক্ষাবিদ বিভা ইন্দু, চাঁদপুরের সঙ্গীত শিল্পী নন্দীতা দাস, খাগড়াছড়ির শাহনাজ সুলতানা, আবৃত্তিশিল্পী রুপশ্রী চক্রবর্তী, কবি রোকেয়া ইসলাম ও মোহাম্মদ সেলিম উজ্জামান প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. দেবব্রত দেব রায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আমরা আগরতলাবাসী আবারও আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করতে যাচ্ছি। গ্রন্থটি তিন শতাধিক লেখকের লেখায় সমৃদ্ধ। কলকাতার প্রেস থেকে এ স্মারকগ্রন্থটি ছাপা হবে। আপনারা জানেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর আমরা প্রথম আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করি। এবারও দ্বিতীয় বারের মতো আমরা প্রথমে ঢাকায় মোড়ক উন্মোচন করব। ড. দেবব্রত আরও বলেন, আমরা দুই দেশে বাস করলেও একই কৃষ্টি, সংস্কৃতি, পরম্পরা, একই ইতিহাস এবং একই রকম অনুভব হৃদয়ে ধারণ করি। আমাদের চিন্তন, আমাদের মননে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করি।
সভায় কবি অসীম সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মরণে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগরতলাবাসী যে উদ্যোগ নিয়েছে এ জন্য তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ঢাকায় আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
কবি আসলাম সানী বলেন, আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন শুধু ঢাকায় নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে এ উৎসবের আয়োজন করা হবে। আমরা আগরতলাবাসীর মহান এ কর্মযজ্ঞের সঙ্গে আছি।
২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রয়াত রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে সাদিদ রেজা চৌধুরী বলেন, স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনে আমার বাবা যেভাবে আপনার পাশে ছিলেন, আমিও আপনার পাশে আছি। আপনারা আমার বাবা ও আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আগরতলা থেকে আসা প্রতিনিধি দলটি শনিবার (১৬ এপ্রিল) ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর’পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।